মাগুরার শ্রীপুরের গড়াই নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে নদী তীরবর্তী শতাধিক পরিবার।অন্যত্র চলে গেছে প্রায় অর্ধশত পরিবার। ইতোমধ্যে নদী ভাঙনে কমলাপুর ও মাটিকাটা গ্রামের ১০টি বাড়ি ও বেশ কিছু ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, হঠাৎ করে গড়াই নদীতে পানি বেড়েছে। ফলে নদী তীরের মাটি ধসে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এর তীরবর্তী এলাকায় বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।
কমলাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুদর্শন বালা জানান, ইতোমধ্যে মাটিকাটা গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন, সুশান্ত বালা, অমল বালা, মতলেব মেল্লা, নারায়ণ মণ্ডল, মোতালেব হোসেন, অমল বালা, সুবর্ণ সরকার, মনিন্দ্রনাথ, অঞ্জলি রানী সরকারসহ অনেকেই নদী ভাঙনের ফলে গৃহহারা হয়েছেন।
ভাঙন কবলিত নাসিরউদ্দীন বলেন, ‘আমার কোনো সম্পদ নেই। শুধু ওই ভিটে টুকুই সম্বল ছিল। এখন তাও নেই। আমি এখন নিঃস্ব।’
স্থানীয় সম্মিলিত পঞ্চগ্রাম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান সরকার জানান, ওই অঞ্চলে আমার বাড়ি। আমার বাড়ি থেকে ভাঙনকবলিত স্থানের দূরত্ব ১৫ মিটার হবে। তাই বাড়িটা বিলীন হওয়ার আগে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে অনুরোধ করছি।
কাদিরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী বিশ্বাস জানান, তিনি নদী ভাঙনের বিষয়টি মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য, শ্রীপুর ইউএনও, মাগুরা জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বিভাগ মাগুরাকে অবহিত করেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এ ব্যাপারে মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন বলেন, আমরা মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গড়াই নদীর ১০টি পয়েন্ট এবং মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর ২০টি পয়েন্টের ভাঙন মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা আকারে পাঠিয়েছি। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কমলাপুর-মাটিকাটা অঞ্চলে পরিদর্শন করার পর যদি ভাঙন বেশি হয় তাহলে ওই বরাদ্দ থেকে কিছু নিয়ে ওখানে ভাঙন রোধকল্পে কাজ করা হবে।