খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রীতি ম্যাচ : মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারাল বাংলাদেশ, সিরিজ শেষ হলো ১-১ সামতায়
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯৪
  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ

গ্রাহকের অর্থ দিয়েই ১০ লাখ বেতন নিতেন রাসেল-শামীমা (ভিডিও)

গেজেট ডেস্ক

চলতি বছরের গত জুন থেকে ইভ্যালির কর্মচারীদের অনেকের বেতন বকেয়া থাকলেও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন পদাধিকার বলে মাসিক ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা বেতন নিয়েছেন। এছাড়া তারা কোম্পানির অর্থে ব্যক্তিগত দুটি দামি গাড়ি (রেঞ্জ রোভার ও অডি) ব্যবহার করেন।

শুধু তাই নয়, কোম্পানির প্রায় ২৫-৩০টি যানবাহন রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে সাভারে গ্রেফতার রাসেলের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জায়গা-জমিসহ অন্যান্য সম্পদ রয়েছে বলে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদরদফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ইভ্যালি ছাড়াও গ্রেফতার রাসেলের আরও কয়েকটি ব্যবসায়িক প্লাটফর্ম রয়েছে সেগুলো হলো- ই-ফুড, ই-খাতা, ই-বাজার ইত্যাদি। ইভ্যালির ব্যবসায়িক কাঠামো শুরু হয়েছিল যৎসামান্য নিজস্ব ইনভেস্টমেন্ট দিয়ে। তার ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি ছিল তৈরিকারক ও গ্রাহক চেইন বা নেটওয়ার্ক থেকে বিপুল অর্থ তুলে নেওয়া। তিনি বিশাল অফার, ছাড়ের ছড়াছড়ি আর ক্যাশব্যাকের অফার নিয়ে সাধারণ জনগণকে প্রলুব্ধ করতেন। এতে দ্রুত সময়ে ক্রেতা বাড়ানো হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ইভ্যালির গ্রাহক সংখ্যা ৪৪ লাখের বেশি। তিনি বিভিন্ন লোভনীয় অফারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে এত সংখ্যক গ্রাহক সৃষ্টি করেছেন। ইভ্যালির বিভিন্ন লোভনীয় অফারগুলো হলো- সাইক্লোন অফার (বাজার মূল্যের অর্ধেক মূল্যে পণ্য বিক্রয়); ক্যাশব্যাক অফার (মূল্যের ৫০-১৫০% ক্যাশব্যাক অফার); আর্দ্রকুয়েক অফার, প্রায়োরিটি স্টোর, ক্যাশ অন ডেলিভারি। এছাড়া বিভিন্ন উৎসবেও ছিল জমজমাট অফার, যেমন- বৈশাখী, ঈদ অফার ইত্যাদি। তাছাড়া আরও রয়েছে টি-১০, ৫ ও ৩ অফার। এভাবে বিভিন্ন অফারে প্রলুব্ধ হন সাধারণ মানুষ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ইভ্যালির কারসাজির মূলহোতা গ্রেফতার মো. রাসেল প্রতিষ্ঠানটির সিইও এবং তার স্ত্রী গ্রেফতার শামীমা নাসরিন (চেয়ারম্যান) তার অন্যতম সহযোগী।

গ্রেফতার রাসেল ২০০৭ সালে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন এবং পরে তিনি ২০১০ সালে এমবিএ শেষ করেছেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন। ২০১১ সালে তিনি ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরি শুরু করেন। তিনি প্রায় ৬ বছর ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি ২০১৭ সালে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি প্রায় এক বছর শিশুদের ব্যবহার্য একটি আইটেম নিয়ে ব্যবসা করেন এবং পরে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা বিক্রি করে দেন।

২০১৮ সালে আগের ব্যবসালব্ধ অর্জিত অর্থ দিয়ে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ইভ্যালি কার্যক্রম শুরু হয়। কোম্পানিতে তিনি সিইও এবং তার স্ত্রী চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হন।

ইভ্যালির ব্যবসায়িক অবকাঠামো সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভাড়া জায়গায় ধানমন্ডিতে প্রধান কার্যালয় এবং কাস্টমার কেয়ার স্থাপন করা হয়। একইভাবে ভাড়া করা জায়গায় আমিন বাজার ও সাভারে দুটি ওয়ার হাউজ চালু করা হয়।

কোম্পানিতে একপর্যায়ে প্রায় ২০০০ ব্যবস্থাপনা স্টাফ ও ১৭০০ অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ ছিল, যা ব্যবসায়িক অবনতিতে বর্তমানে যথাক্রমে স্টাফ ১৩০০ জন এবং অস্থায়ী পদে প্রায় ৫০০ জন কর্মচারীতে এসে দাঁড়িয়েছে। কর্মচারীদের একপর্যায়ে মোট মাসিক বেতন বাবদ দেওয়া হতো প্রায় ৫ কোটি টাকা, যা বর্তমানে দেড় কোটিতে দাড়িয়েছে বলে গ্রেফতাররা জানান।

র‌্যাব কর্মকর্তা কমান্ডার মঈন বলেন, ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দায় ও দেনা ছিল ৪০৩ কোটি টাকা। চলতি সম্পদ ছিল ৬৫ কোটি টাকা, বিভিন্ন পণ্য বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম নেওয়া ২১৪ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন গ্রাহক ও কোম্পানির কাছে বকেয়া প্রায় ১৯০ কোটি টাকা। তবে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল জানিয়েছেন, তার দেনা এখন হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে লোকসানি এ কোম্পানিটি কোনো ব্যবসায়িক লাভ করতে পারেনি। গ্রাহকের অর্থ দিয়েই যাবতীয় ব্যয় ও খরচ নির্বাহ করায় দেনা বরাবর বেড়েছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!