গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা ও কাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আলোচনার পর ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি দল ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করে, যা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
আজ বিকাল ৫টায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা এই ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এসব দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
৯ দফা দাবিসমূহ হচ্ছে-
ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ: বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ৫৫ একর আয়তন বৃদ্ধি করে অন্তত ১৫০ একর করতে হবে।
ছাত্র সংসদ গঠন: ৭ দিনের মধ্যে ছাত্র সংসদ গঠনের রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে এবং দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ডে ৪ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি, যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকদের শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত করতে হবে এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত শিক্ষকদের রাখা যাবে না। (আগামী ৩ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থী প্রতিনিধির জন্য রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট সার্কুলার প্রকাশ করতে হবে)।
লাইব্রেরি উন্নয়ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সংস্কার ও আধুনিকায়নে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখতে হবে।
ক্যাফেটেরিয়া মানোন্নয়ন: ক্যাফেটেরিয়ার খাদ্যের মান ও পরিষেবা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
নতুন ভবন নির্মাণ: দ্রুত সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় একাডেমিক ভবন এবং একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মাণ করতে হবে।
আবাসন সংকট নিরসন: ছেলেদের জন্য একটি নতুন হল এবং মেয়েদের জন্য একটি নতুন হল নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।
গণ-অভ্যুত্থানের বিরোধীদের তালিকা প্রকাশ: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিরোধীতাকারীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধি: প্রতিটি বিভাগে অন্তত ২০ জন শিক্ষক নিশ্চিত করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত না হয়।
এসময় ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী তহা, হাবিবুর রহমান, সাইদুর রহমান, নিঘাদ রোদ্র, আল মাহমুদ প্রমুখ।
এসময় ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় আমাদের এসব দাবি জরুরি। আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে।
মোহাম্মদ আলী তোহা বলেন, শিক্ষার্থীরা কোনো অবাস্তব দাবি উপস্থাপন করেনি। আমরা চাই, একটি আধুনিক ও শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস যেখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থী সমান সুযোগ পাবে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এসব দাবি বাস্তবায়ন করা।”
সংবাদ সম্মেলনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ৯ দফা দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন চায় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। শিক্ষার্থীরা মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি ও শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য এসব দাবি বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
খুলনা গেজেট/এমএম