গোপালগঞ্জের সবজি গ্রাম হিসাবে পরিচিত রঘুনাথপুর, সিলনা, গুয়াধানা, গোপালপুরের হাজারো কৃষক এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমিতে শাক-সবজির যত্ন নেয়া আর সেই সাথে বাজারে নিয়ে তা বিক্রি করছেন। আয়ও করছেন ভাল। বিগত বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা সদা ব্যস্ত এখন। শীতের সবজি বাজারে আসতে থাকায় বাজারে সবজির দামও কমতে শুরু করেছে।
গোপালগঞ্জের রঘনাথপুর, সিলনা, গুয়াধানা, গোপালপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলের চারিদিকে মাছের ঘের আর তার পাড়ে চাষ করা হয়েছে নানা ধরনের সবজি। যেদিকেই তাকানো যাবে সেদিকেই শুধু সবজি আর সবজি। পাতা কপি, ফুল কপি, লাল শাক, পুইশাক, ধনে পাতা, উচ্ছে, লাউসহ নানা শাক-সবজিতে ভরপুর এসব এলাকার ক্ষেত-খামার। এসব গ্রামের পুরুষ-মহিলা সবাই ব্যস্ত এখন ক্ষেতে-খামারে। গ্রাম গুলোতে মুলতঃ অন্য ফসলের দিকে ঝোক নাই কৃষকদের। শাক-সবজি ফলিয়েই এসব গ্রামের হাজারো কৃষক তাদের জীবন-জীবিকা চালান। বিগত বন্যায় এসব গ্রামের কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকেরা সদা তৎপর। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সবজির ফলন হয়েছে ভাল। দামও পাচ্ছেন ভাল। শীতের সবজি বাজারে আসতে থাকায় বাজারে সবজির দামও কমতে শুরু করেছে।
সিলনা গ্রামের সরেশ মন্ডল বলেন, সবজি চাষ করেই আমাদের জীবন জীবিকা চলে। বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন আমরা শীতকালিন সবজি চাষ করেছি। শশায় আমরা বেশ খাল দাম পেয়েছি। এখন টমেটায় যদি ভাল দাম পাই তাহলে বর্ষা মৌসুমে যে ক্ষতি হয়েছে তা আমরা পুশিয়ে নিতে পারব।
গুয়াধানা গ্রামের কৃষক মিহির বিশ্বাস বলেন, আমাদের ঘের পাড়ে সবজি চাষ করি। এ মৌসুমে ঘের পাড়ে লাউ, ফুলকপি, উচ্ছের চাষ করেছি। প্রতি সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ মন উচ্ছে বিক্রি করি। প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ লাউ বিক্রি করি। এই আয় থেকেই আমাদের সংসার খরচ এবং ছেলে মেয়ের পড়াশুনার খরচ চলে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা রঘুনাথপুর শিলনা ও টুঙ্গিপাড়ার গুয়াধানা, রূপাহাটি, গোপালপুর এসব গ্রামে ঘের পাড়ে বিপুল পরিমাণ শাক-সবজি উৎপাদন করেছেন কৃষকেরা। তবে বন্যায় ঘের ডুবে গিয়ে সবজির ক্ষতি হয়েছে। এসব গ্রামের কৃষকেরা এই শীত মৌসুমে পাতা কপি, ফুল কপি, লাল শাক, পুইশাক, ধনে পাতা, উচ্ছে, লাউসহ নানা শাক-সবজি সবজি চাষ করেছে। এসব সবজি বাজারে বিক্রি করে বিগত বন্যার ক্ষতি পোষাতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/এনএম