আয়নাঘরের চেয়েও ভয়াবহ আটটি গোপন বন্দিশালার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে বছরের পর বছর গুম হওয়া ব্যক্তিদের রেখে নির্যাতন করা হতো।
গুম কমিশনের প্রধান বিচারপতি মইনুল ইসলাম মঙ্গলবার গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কার্যক্রম বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম বলেন, “এখানে রাজনৈতিক কারণেই বেশিরভাগ ব্যক্তিকে গুম করা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক কারণ ছাড়া স্বপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগের বাইরে অনেককে গুম করা হয়। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২০০’র বেশি গুম হওয়া মানুষকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি।
আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে নেওয়ার কথা থাকলেও মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর রাখা হতো আইনের তোয়াক্কা না করে।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত এক হাজার ৬০০টির মতো অভিযোগ পাওয়া গেছে গুমের। এর মধ্যে ৪০০ এর বেশি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। এর মধ্যে র্যাবের বিরুদ্ধে ১৭২টি, সিটিসির ৩৭টি, ডিবির ৫৫টি, ডিজিএফআই ২৬টি, পুলিশের ২৫টি এবং অন্যান্যভাবে গুমের ৬৮টি ঘটনা। এসব ঘটনা তদন্তে গিয়ে এসব বাহিনীর আটটি গোপন বন্দিশালা পেয়েছে কমিশন, যেখানে বছরের পর বছর গুম হওয়া ব্যক্তিদের রেখে নির্যাতন করা হতো।”
তিনি বলেন, “গুমের ১৪০ অভিযোগের বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।”
দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করার কথাও বলেন গুম কমিশনের প্রধান।
গত ২৭ আগস্ট ওই গুম কমিশন গঠন করে সরকার। কমিশনের কাছে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে গুমের ঘটনার অভিযোগ জানানোর সুযোগ ছিল কমিশনে। গত ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত গুমের অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন।
খুলনা গেজেট/এনএম/এএজে