খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রীতি ম্যাচ : মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারাল বাংলাদেশ, সিরিজ শেষ হলো ১-১ সামতায়
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯৪
  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ

৬ হাজার বোমায় ধংসস্তুপ গাজা, লাশ রাখারও জায়গা নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাত নামলে অন্ধকার, খাবার ও পানির তীব্র সংকট। এর মধ্যে আকাশ থেকে পড়া বোমার আগুনে মৃত্যুভয় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সব সময়। বোমায় জ্বলছে বড় বড় ভবন, প্রাণ হারাচ্ছেন নারী-পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ। এমন এক বিভীষিকাময় সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনের গাজার ২২ লাখ মানুষের জীবন। তাঁদের পালানোর কোনো পথ নেই। নেই চিকিৎসার সুযোগ, এমনকি মৃত স্বজনকে সমাহিত করার জায়গাও এখন পাওয়া যাচ্ছে না।

গত ছয় দিনে ৩৬৩ বর্গকিলোমিটার এলাকার গাজায় ছয় হাজারের মতো বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। এগুলোর ওজন চার হাজার টন। শক্তিশালী এসব বোমার আঘাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে গাজার অনেক আবাসিক এলাকা। তাতে মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও নিয়মিত বাড়ছে। এরই মধ্যে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ছয় হাজারের বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে ৪৪৭ শিশু এবং ২৪৮ জন নারী।

মৃতের সংখ্যা এক দ্রুত বাড়ছে যে কবরস্থানগুলোতে আর কবর দেওয়ার জায়গা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার গাজার খান ইউনিস এলাকার একটি কবরস্থানে একটি নোটিশে লেখা ছিল, ‘এখানে কবর দেওয়া নিষেধ’। কারণ, সেখানে নতুন কবর দেওয়ার মতো আর জায়গা নেই। প্রায় একই চিত্র গাজার বেশির ভাগ কবরস্থানের। শুধু কবরস্থানে জায়গার সংকটই নয়, হামলার কারণে সেখানে পৌঁছানোও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। খান ইউনিসে দাফনের কাজে হাত লাগানো স্বেচ্ছাসেবক আদেল হামাদা বলেন, নির্ধারিত স্থানে নিহতের দাফনের জন্য অপেক্ষার সুযোগ নেই। বাড়ির আশপাশেই খোলা জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দাফন করতে হচ্ছে।

কবরস্থানের মতো হাসপাতালের মর্গগুলোতেও স্থান সংকট দেখা দিয়েছে। বোমা হামলার ধ্বংসস্তূপ থেকে মর্গে আসছে সারি সারি লাশ। বৃহস্পতিবার খান ইউনিসের একটি মর্গে দেখা যায় নিহতদের স্বজনদের ভিড়। এক পরিবারের নিহত আটজনের মরদেহ নিতে এসেছিলেন পরিচিতজনেরা। আগের দিন পরিবারটির বাড়িতে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েল। বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০টি মরদেহ রয়েছে বলে জানান তাঁরা।

পরিস্থিতি ভয়ানক

হামাসের হামলার পরপরই গত শনিবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ইসরায়েল। এরপর সোমবার তারা পুরোপুরি গাজা অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। সেখানে বন্ধ করা হয় গ্যাস, পানি, খাবার ও জ্বালানি সরবরাহ। জ্বালানির অভাবে বুধবার গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর জেনারেটর চালিয়ে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা চলছিল। তবে জ্বালানির যে মজুত ছিল, তা বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস।

বিদ্যুৎহীন গাজার রাতগুলো আরও অন্ধকার হয়ে উঠেছে। ঘরবাড়ি-রাস্তা কোথাও জ্বলছে না বাতি। এরই মধ্যে ভেসে আসছে বোমার শব্দ। রাতের আকাশ চমকে উঠছে বিস্ফোরণের আলোয়। এর মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বাড়ি ছাড়ছেন গাজার বাসিন্দারা। অনেকে ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর দিকে। গাজায় জাতিসংঘের স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন ২ লাখ ১৮ হাজারের বেশি মানুষ। এমনই একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ১৪ বছরের কিশোরী হানান আল-আত্তার। ইসরায়েলের বোমায় দুই চাচাকে হারিয়েছে সে। তাদের বাসাটিও ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!