যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার একটি ত্রাণ বিতরণ পয়েন্টে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার ওই ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি সৈন্যদের নির্বিচার গুলিতে অন্তত ১০৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও সাত শতাধিক ফিলিস্তিনি।
বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি একাধিক সূত্রও ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা লোকজনের ভিড়ে সৈন্যরা গুলি চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে উত্তর গাজার ওই ত্রাণ কেন্দ্রে উপস্থিত ফিলিস্তিনিরা ‘‘হুমকি তৈরি করেছে’’ ধারণা থেকে সৈন্যরা গুলি চালিয়েছে।
গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি বাহিনীর এই হামলার ঘটনাকে ‘‘গণহত্যা’’ উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে কমপক্ষে ১০৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৬০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে বলেছেন, গাজা শহরের পশ্চিম নাবুলসি গোলচত্বরে ত্রাণের ট্রাকের দিকে খাবারের জন্য মরিয়া হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসেন। সেই সময় এই সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘ত্রাণ-বোঝাই ট্রাকগুলো কিছু সেনা ট্যাংকের খুব কাছাকাছি চলে আসে। ওই সময় হাজার হাজার মানুষ ট্রাকের দিকে ছুটে আসেন। তারা ট্রাকগুলোতে হামলে পড়েন। লোকজন ট্যাংকের খুব কাছে চলে আসায় ইসরায়েলি সৈন্যরা ভিড় লক্ষ্য করে গুলি চালায়।’’
এই ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘‘উত্তর গাজা উপত্যকায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের সাথে সাথে গাজার বাসিন্দারা ট্রাকগুলো ঘিরে ফেলে এবং সরবরাহ করা ত্রাণ-সামগ্রী লুট করে।’’
‘‘ঘটনার সময় ধাক্কাধাক্কি ও পদদলিত হয়ে কয়েক ডজন গাজাবাসী আহত হয়েছেন। এই ঘটনা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’
পরে ইসরায়েলি একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছে, লোকজন এমনভাবে ইসরায়েলি বাহিনীর কাছাকাছি এসেছিল; যা সৈন্যদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পরে তাজা গুলি ছুড়ে হুমকি মোকাবিলা করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি