খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ

গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশুর মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দখলদার ইসরাইলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের প্রায় সবাই শিশু, নারী ও বেসামরিক নাগরিক। গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একজন শিশুর মৃত্যু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস।

শুক্রবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরাইলি হামলায় শহরে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০৬ জন শিশু। গাজায় নিহত নারীর সংখ্যা ৩ হাজার ২৭ জন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ বিমান হামলায় গাজা সিটির আল-বুরাক স্কুলে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) এ হামলার ঘটনা ঘটে। গাজার বৃহৎ চিকিৎসাকেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন, হামলার পর হাসপাতালে এসব মরদেহ নিয়ে আসা হয়।

গাজায় আঘাতপ্রাপ্ত অসংখ্য ব্যক্তি এবং গর্ভবতী নারীদের সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা কোনো রকম চেতনানাশক ছাড়াই অস্ত্রোপচার করছেন।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় জ্বালানি সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে সেখানকার অন্যতম আল শিফা হাসপাতাল। গত ৪৮ ঘণ্টায় বন্ধ হয়ে গেছে আরও ৩টি হাসপাতাল। এ ছাড়া আল কুদস হাসপাতালের আইসিইউতে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভয়াবহ আকার নিয়েছে বলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস।

গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালগুলোর একটি ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালও বিদ্যুৎ সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে। গাজার আরেকটি হাসপাতাল আল কুদসের আইসিইউ লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে। রোগীতে পরিপূর্ণ থাকা আল শিফা হাসপাতালও জ্বালানি সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান শুক্রবার বলেছেন, গাজার অর্ধেক হাসপাতালই অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিনি উপত্যকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা চূড়ান্ত সীমায় রয়েছে। ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে তিনি বলেন, গাজার ৩৬টি হাসপাতাল এবং এর দুই-তৃতীয়াংশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের অর্ধেকই কাজ করছে না। যেগুলো কাজ করছে তারা তাদের সামর্থ্যের বাইরে কাজ করছে।

তিনি বলেন, গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা চূড়ান্ত সীমায় রয়েছে। তবু কোনো না কোনোভাবে জীবন রক্ষার জন্য লড়াই অব্যাহত রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীদের এখন ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও জ্বালানির প্রচণ্ড প্রয়োজন। সেখানে প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবে সেখানে কোথাও এবং কেউ নিরাপদ নয়।

ডব্লিউএইচও প্রধানের মতে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চারটি হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে জ্বালানির অভাবে। হাসপাতালগুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৪৩০ শয্যা ছিল। তবে এর চেয়েও অনেক বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। ইসরাইলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত শতাধিক জাতিসংঘের কর্মী নিহত হয়েছেন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে প্রবেশ করে এক আকস্মিক হামলা চালান হামাসযোদ্ধারা। এতে এক হাজার ৪০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া আরও দুই শতাধিক ব্যক্তিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস। এ ঘটনার পর থেকেই গাজার ওপর হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী।

সম্প্রতি জাতিসংঘ বলেছে যে, গাজা শিশুদের কবরস্থান হয়ে উঠছে। এটি একটি যুদ্ধবিরতির দাবিকে বাড়িয়ে তুলছে। এর আগে জাতিসংঘের সংস্থার প্রধানরা গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য বিরল যৌথ আবেদন করেছেন। জাতিসংঘের ১৮টি সংস্থার নেতারা ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। সেখানে ইসরাইলের ভয়াবহ হামলায় মৃতের সংখ্যায় হতবাক হয়েছেন তারা। এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংস্থাগুলোর প্রধানরা।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!