সাতক্ষীরার তালায় সানজিদা আক্তার তুলি (১৭) নামে কলেজ ছাত্রী গাঁয়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার করেছে। বৃহস্পতিবার (১ মে) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার ঘোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় দগ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে বিকালে মৃত্যু হয় তার।
তুলি উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামের মো. কামরুল সরদারের মেয়ে। তিনি তালা মহিলা ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির উঠানে ও রাস্তায় পাশে কলাবাগানে তার শীরের পুড়ে যাওয়া উপরের অংশ গাঁয়ের জামা কাপড়ের সাথে উঠে গেছে। পরিধেয় কাপড়ের অংশ বিশেষ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং ঘটনাস্থল থেকে কেরসিনের তীব্র গন্ধ পাওয় যায়। গাঁয়ে আগুন জ্বলতে শুরু করলে যে অঞ্চল দিয়ে সে ছুটাছুটি করেছে সে অঞ্চলের গাছের কাঁচা পাতা পর্যন্ত পুড়ে যায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তুলি বাড়ির সামনে উঠানের শেষ প্রান্তে বসে নিজের শরীরে কেরসিন দিয়ে ভিজিয়ে গ্যাস লাইটের সাহায্যে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় তার মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজে ব্যস্ত ছিলো এবং বাবা খুলনায় রিক্সা চালাতে গিয়েছিলো। গায়ে পুরোপুরি আগুন ধরে গেলে তার ডাকচিৎকারে প্রতিবেশী এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ততক্ষণে তার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় এ্যাম্বুলেন্স যোগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এঘটনায় তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল, সার্কেল এসপি মো. হাসানুর রহমান, তালা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ সফিকুল ইসলাম, তালা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান, ইসলামকাটি ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাঃ গোলাম ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সূত্র জানায়, তুলিদের বাড়ির সামনেই মসজিদে তিন মাস পূর্বে ডুমুরিয়া উপজেলার কাঞ্চনগনর গ্রামের আমিনুর রহমান নামে এক অবিবাহিত যুবক ইমামতি করতেন। এই যুবকের নিকট বিয়ের প্রস্তব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয় তুলি। এ ঘটনায় ইমামতি ছেড়ে পালিয়ে যায় সে। তবে শরীরে আগুন লাগানোর পূর্বে তার হাতে কলম দিয়ে আমিনুরের নাম লেখা ছিলো বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ইসলামকাটি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বলেন, আমি শুনেছি স্থানীয় মসজিদের ইমামের সাথে একতরফা প্রেম চলছিলো। মেয়েটা ছেলেটিকে ভালোবাস কিন্তু ওই ছেলেটি তাকে ভালোবাসেনি। যার কারণে সে পালিয়ে যায়। সে কারণে হয়তো মেয়েটি গাঁয়ে কেরসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
তালা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে আমি ও আমার উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। কি কারণে এ আত্মহত্যার এখনো জানতে পারিনি। বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে আছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে কি কারণে আত্মহত্যা করেছে। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানায় আনা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে