খুলনায় গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে মুরগীও । মাংসের দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতারা দুষছেন ব্যবসায়ীদের। আর ব্যবসায়ীরা দুষছেন ফার্ম মালিকদের।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, ঈদ পূর্ববর্তী সময়ে গরুর মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগের দিন তা বেড়ে ৮৫০ টাকায় পৌঁছায়। কিন্তু ঈদের পরে তা আর পূর্ব অবস্থায় আসেনি। বর্তমানে ৭৫০ টাকায় মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে মুরগীর দাম আগের দরেই আছে। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা যথাক্রমে ব্রয়লার ২৩০ টাকা, লেয়ার ৩২০ টাকা, কর্ক ও সোনালিকা যথাক্রমে ৩৩০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
নগরীর ময়লাপোতা এলাকার মাংস বিক্রেতা মো: জাহিদ হোসেন বলেন, দেশে গরুর সংখ্যা কমে গেছে। তাছাড়া ঢাকার কসাইরা এখন খুলনার মোকামে আসে। খুলনার ব্যবসায়ীদের হাটের ফড়িয়া ও খামারীরা মূল্যায়ন করেনা। তাদের কাছ থেকে উচ্চ দামে গরু বিক্রি করে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে অনেক গৃহস্থ হাটে গরু আনছেন না। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ফার্মের মালিকেরা সরকারের কাছ থেকে টাকা লোন করে গরু পুষছেন। কিন্তু সেগুলো যদি তারা হাটে ওঠান তার দামও থাকে চড়া।
তিনি আরও বলেন, গরু যদি ভারত থেকে আমদানি করা হয় তাহলে এর দাম হাতের নাগালে আসবে। না হলে ফার্মের মালিকদের মর্জির কারণে এর দাম আগামীতে আরও অনেক বেড়ে যাবে।
রাজু বীফ স্টোরের মালিক মো: রাজু বলেন, গো খাদ্যের দাম অনেক বেশী। পরিবহন খরচ বেড়েছে অনেক। ময়লাপোতা মোড়ে মাংসের দোকানে সংখ্যা ১৫ টি। মাংসের দাম বাড়তি থাকায় এখন আর আগের মতো গরু পড়েনা এ মোড়ে। এখন ১০ গরু জবাই করা হয় শুক্রবারে। ক্রেতারা আর আগের মতো এখন মাংস কেনেন না। যারা ১০ কেজি কিনত তারা এখন ২ কেজি মাংস ক্রয় করেন। এখানে অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। মাংসের দাম কমানোর জন্য তিনি পরামর্শ দিলেন, গরু আমদানি করতে হবে। গরুর ব্যবসায়ে ফার্ম মালিকদের কতৃত্ব কমাতে হবে।
এদিকে নগরীর দোলখোলা মোড়ের মুরগীর দোকানী মুরগীর দাম বৃদ্ধির জন্য সরাসরি ফার্ম মালিককে দায়ি করেছেন। তিনি বলেন, খাবারের দাম ২ টাকা বাড়লে মুরগীর দাম তারা ১০ বাড়িয়ে দেন। কিন্তু খাবারের দাম কমলেও তারা কমায় না। তিনি বলেন, ফার্মে অভিযান চালালে মুরগীর দাম কমে যাবে।
ওই এলাকার বাসিন্দা টুলু খন্দকার বলেন, গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধির পর ফার্মের মাংসের ওপর নির্ভরশীল হয়েছিলাম। কিন্তু দাম বৃদ্ধি হওয়াতে ঈদে তিনি মাংস খাননি। দাম কম হলে তিনি মাংস খাবেন। তিনি আরও বলেন, দাম বেড়েছে ঠিকই কিন্তু আয় বাড়েনি তার। গরীব মানুষ অন্যের কাছে হাত পাততে পারে কিন্তু আমাদের মতো মধ্যবিত্তের হয় মরণ।
হাসিবুল বাসার ময়লাপোতা মোড়ে মাংস কিনতে এসে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, গরুর মাংস আর খাওয়ার মতো নেই। আগে তিনি মাসে ৬ কেজি মাংস কিনতেন এখন কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। মাংসের দাম কমানোর জন্য তিনি সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছেন।
অপর এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা অহেতুক যুক্তি দেখিয়ে মাংসের দাম বৃদ্ধি করছেন। বাজার মনিটর না থাকায় ধাপে ধাপে বাড়ছে মাংসের দাম। তাই বাজার মনিটর করা অতিব জরুরী।
খুলনা গেজেট/ এসজেড