তীব্র তাপদাহে কোনো কিছুতেই স্বস্তি মিলছে না। ঘন ঘন গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। এ সময় সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পানি পানের পাশাপাশি বিভিন্ন তরল খাবারও খাওয়া প্রয়োজন। তা না হলে কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, গরমের দিনে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা কমায় টক দই। এটি এমন একটি খাবার যা শরীর যেমন ঠান্ডা রাখে, তেমন কাজ করার শক্তিও দেয় । এছাড়াও গরমে টক দই খেলে আরও যেসব উপকারিতা পায় তা জানানো হয়েছে ‘হেলথশটে’র এক প্রতিবেদনে।
শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে : ঘরমে অতিরিক্ত ঘাম হয়। এ কারণে শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে টক দই খুব উপকারী। এটি হালকা এবং ঠান্ডা ধরনের খাবার। এ কারণে গরম আবহাওয়ায় তাপ এবং আর্দ্রতা মোকাবেলা করার জন্য টক দই আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাছাড়া, প্রতিদিন এক বাটি দই খাওয়া শুধু আপনাকে হাইড্রেটেড রাখে না, শক্তির মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়।
হজমে সাহায্য করে : তাপ বাড়ার সাথে সাথে পরিপাকতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে, এর ফলে হজমজনিত নানা সমস্যা দেখা দেয়। টক দই সেক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে। দইয়ে থাকা স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া হজমশক্তি উন্নত করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আপনি যদি বদহজম বা অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন, তাহলে দই হতে পারে সঠিক সমাধান। এটি বুক জ্বালাপোড়া এবং অ্যাসিডিটি কমাতেও সাহায্য করে। এছাড়াও,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ঠান্ডা-কাশিসহ নানা ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
হাড় মজবুত করে: দইয়ের অন্যতম প্রধান স্বাস্থ্য উপকারিতা হল এটি অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই রোগে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। দই হাড় ক্ষয়ে ঝুঁকি কমায়। দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের মতো, দই ক্যালসিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস। এটি শুধুমাত্র হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে না বরং শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে।]
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে: গরমের এই সময় আপনি যদি ওজন ঝরাতে চান তাহলে দই হতে পারে দারুন সমাধান। দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক পরিপাকতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং বিপাককে উন্নত করে। এর ফলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া সহজতর হয়। দইয়ে কার্বোহাইড্রেট কম এবং প্রোটিন বেশি থাকা এটি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে দারুন সুপারফুড।
উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ কমায়: ছোট ছোট বিষয় নিয়েও দুশ্চিন্তা করা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আর এই বদভ্যাসের ফলে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। সুস্থ থাকতে চাইলে মানসিক চাপ কমাতেই হবে। সেক্ষেত্রে দই হতে পারে দারুন বিকল্প। আর এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা দুশ্চিন্তা এবং উৎকণ্ঠায় ভুক্তভোগীদের নিয়মিত দই খাওয়ার পরামর্শ দেন।
অনেকেই দই মানেই মিষ্টি দই খাওয়া বোঝেন। কিন্তু মিষ্টি দইয়ে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে যা ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে প্রতিদিন মিষ্টি দই খাওয়ার লোভ সামলে নিতে হবে। এমনকী ফ্যাট যুক্ত টক দই খাওয়াও ঠিক নয়। এর পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি ফ্যাটলেস দুধের টক দই হলে সবচেয়ে ভালো হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম