খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাতে জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস
  কেসিসিসহ দেশের সব সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি
খুলনায় জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান

‘গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামীলীগকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, গণহত্যাকারীদের জনগণের ময়দানে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। কেননা রাজনীতি করতে হবে দেশের মানুষের আকাঙ্খাকে ধারণ করে, বাইরের কারও সাহায্য নিয়ে নয়। রাজনৈতিক দলসহ সকল পর্যায়ের স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সাথে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিদায় নিতে হবে। কেননা বছরের পর বছর দেরি করলে আগাছা জন্ম নিতে পারে, বিশৃংখলা সৃষ্টি হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ আল ফারুক সোসাইটিতে খুলনা মহানগর ও জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।  বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে রুকন সম্মেলনে বক্তৃতা করেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

শিক্ষা সংস্কার কমিশনে আল্লাহকে স্বীকার করেন না এমন লোকদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমীর বলেন, শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমী নেসাবের আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭জন চৌকস সেনা সদস্য হত্যাসহ দেশের সকল হত্যাকান্ড এবং এর মাষ্টার মাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তা’ না হলে আবারো জালিমদের আগমন হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।

রুকন সম্মেলনে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, বিগত পনের বছরের আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের কোন নাগরিকই লুটপাট ও জুলুমের বাইরে ছিল না। হাজারো মানুষের, মা-বোনদের, শিশুর কান্নার রোল আল্লাহর আরশে পৌঁছে গেছে। যার ফলেই জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।

আওয়ামীলীগের শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে আমীরে জামায়াত বলেন, বিডিআর হত্যার মধ্যদিয়ে ফ্যাসিবাদি শাসনের প্রথম ধাপ শুরু হয়। এরপর জামায়াতের ওপর স্টিম রোলার চালানো হয়। পর্যায়ক্রমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে অথবা কারাগারে রেখে হত্যার মধ্যদিয়ে শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়। যারা সারাজীবন ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেই ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু ইতোমধ্যেই জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা গ্রেফতার হতে শুরু করেছে। বর্তমান সরকার ওইসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় এনে একটি বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা করবে বলেও তিনি আশা করেন।

রুকন সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন। দারসুল কুরআন পেশ করেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক।
সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন, মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল ও জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান।

রুকন সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যক্ষ মশিউর রহমান খান ও মাস্টার শফিকুল আলম, সাতক্ষীরা জেলা আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, বাগেরহাট জেলা আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, খুলনা জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার ও অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা নায়েবে আমীর এডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, সাতক্ষীরা জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, বাগেরহাট জেলা সেক্রেটারি শেখ মো. ইউনুস, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম ও প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, খুলনা জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও প্রিন্সিপাল গউসুল আযম হাদী।

রুকন সম্মেলনে বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রেরণা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদ ও টাইফুন শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীবৃন্দ।

উল্লেখ্য, বিগত পনের বছর পর এই প্রথমবারের মতো জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নগরীর আল ফারুক সোসাইটিতে প্রকাশ্যে রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। রুকন সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মহানগরী ও জেলা জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। এর আগে ২০১০ সালে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে প্রকাশ্যে মহাসমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এরপর প্রকাশ্যে আর কোন কর্মসূচি পালন করতে পারেনি খুলনা জামায়াত।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!