অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে খৎনা করাতে গিয়ে সম্প্রতি দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেনকে জিরো টলারেন্স দেখাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যখাতের সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী নিজেই এ কথা জানিয়েছেন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, গতকাল (শনিবার) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি, তিনি আমাকে বলেছেন এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাতে। কোনোরকম অনিয়ম, গাফিলতির কারণে কোনো শিশু মারা গেলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরকম কড়া নির্দেশ উনি আমাকে দিয়েছেন।
বৈঠকের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সেটার পর্যালোচনা করে আমরা সবাই আলাপ-আলোচনা করেছি যে, কীভাবে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কীভাবে ক্লিনিক পরিচালনা করবে কি কি ক্রাইটেরিয়া থাকা লাগবে।
তিনি বলেন, এটি (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা) গত বৃহস্পতিবার আমরা দিয়েছিলাম আজ (রোববার) আমরা ৩/৪ দিন সময় দিয়েছি দেখি কি করে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই এটি আমি নিজে মনিটরিং করব।
সামন্ত লাল সেন বলেন, চিকিৎসক ভাই-বোনদের বলতে চাই, আমরা সেই জায়গায় অপারেশন করব…, অপারেশন করার আগে আমাদের দেখতে হবে সেখানে সাপোর্টিং জিনিস আছে কি না। সেটা অপারেশন করার জায়গা কি না।
তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক অপারেশন করেছি সুতরাং আমি জানি কোথায় কি কি লাগে, কি কি ক্রাইটেরিয়া লাগে অপারেশন করার জন্য। সেগুলো না থাকলে কেনো অবস্থাতেই এটা করা যাবে না।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) হচ্ছে আমাদের সর্বোচ্চ আদালত। ইতোমধ্যে আমি বিএমডিসির সঙ্গে কথা বলেছি, এই তিনটি (অ্যানেন্থেসিয়া দিয়ে খৎনা ও এন্ডোস্কোপি করাতে গিয়ে মারা যাওয়া) ঘটনার বিষয় ইনভেস্টিগেশন করার জন্য এবং যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আমার কথা চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেবে, রোগীদেরকেও সুরক্ষা দেবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেওয়া ১০ দফা নির্দেশনার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, আমি নিজে এটা মনিটরিং করব। আমি আপনাদের আগেও বলেছি, এখনো বলছি আমি এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। আমি এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেব না, যার যেখানে যে যোগ্যতা, সেই যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করবে, এর বাইরে কাজ করতে পারবে না। এটা ক্লিয়ার কাট।
অবৈধ ক্লিনিক এর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান। আমি এটা চলমান রাখব।
তিনি বলেন, আমি সেদিন ময়মনসিংহ গিয়েছিলাম, আসার সময় দেখি ডানে-বামে কত ক্লিনিক। এটাতো আমার একার পক্ষে সম্ভব না, এটার জন্য সবার ভূমিকা লাগবে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের ভূমিকা লাগবে। সামগ্রিকভাবে যদি এটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো যায় এটা সম্ভব।
এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক কর্মকর্তা জানান, হাইকোর্টে আমরা ১২৭টি অবৈধ ক্লিনিকের তালিকা দিয়েছে। এর সবগুলো বন্ধ করা হয়েছে এবং বন্ধ করার পরে মাঠপর্যায়ে খবর নিয়েছে এগুলো বন্ধ হয়েছে কিনা।
খুলনা গেজেট/এনএম