সাগরে নিম্মচাপের প্রভাবে টানা পাঁচ দিনের বর্ষনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর। ঝুকিতে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ। শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার স্থানের নিন্ম অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। টানা বর্ষনের ফলে উঠতি ফসলের কমবেশি ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে নিন্ম চাপের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলের নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত ২টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় টানা বৃষ্টি হয়েছে। খোলপেটুয়া নদীতে জোয়ার বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির চাপে জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কামারখালি ভেড়িবাঁধ ও শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের বিড়ালক্ষী এলাকায় পাউবো’র ভেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। সকাল থেকে ভেড়িবাঁধের এ দুটি পয়েন্ট দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে। খবর পেয়ে ইউনিয়নের শতাধিক মানুষ সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তৎক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্ত ভেড়িবাঁধ রক্ষায় সংস্কার কাজ শুরু করে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকালে হঠাৎ আটুলিয়া ইউনিয়নের বিড়ালক্ষ্মী এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর বোড়িবাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হয়। বেড়িবাঁধে ভাঙন লাগায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করেছে। ইতিমধ্যে ২০০ ফুট বেড়িবাঁধ নদীতে ধসে গেছে। যে কোনো সময়ে পুরো বাঁধ ভেঙে গিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে।
আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ জানান, টানা বৃষ্টিপাত ও নিম্নচাপের কারণে বিড়ালক্ষ্মী এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ২০০ ফুট বেড়িবাঁধের অংশ নদীতে নেমে গেছে। যে কোনো মুহূর্তে সম্পূর্ণ বাঁধ নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হলে তারা বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ভাঙন পয়েন্টে কাজ শুরু করেছে। অন্যান্য বাঁধগুলোর অবস্থা নাজুক হওয়ায় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। যে কোনো একটি বাঁধ ভেঙে গেলে উপজেলার সব এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ি পাঁচ দিনে ১১৬দশমিক ৯মিঃমিঃ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধের যেখানে ভাঙন দেখা দিয়েছে বুধবার সকাল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সেখানে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। লোকালয়ে পানি প্রবেশ না করায় কিছুটা নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে। যাতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ না করে সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। তাছাড়া অন্য বেড়িবাঁধগুলোও নজরে রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হুমায়ূন কবির জানান, নিন্ম চাপের ফলে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছ।
খুলনা গেজেট/রুহুল কুদ্দুস/এমএম