খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সোনারগাঁওয়ে টিস্যু গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট
  আগামীতে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর : আলজাজিরাকে ড. ইউনূস

খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন, আতঙ্কিত এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের কাকবসিয়া গ্রামের খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৩০০ ফুট জায়গা জুড়ে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এই ভাঙন দেখা দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন উপজেলার তিন ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।

কাকবসিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে খোলপেটুয়া নদীর প্রবাল জোয়ারের তোড়ে আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের কাকবসিয়া খেয়াঘাট এলাকায় তিনশ ফুট এলাকা জুড়ে পাউবো’র বেড়িবাঁধের একাংশ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে ধসে পড়ে। এতে নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলা, আম্পান, বুলবুলসহ একাধিক দুর্যোগের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে এসব এলাকার নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ। ফলে নদীতে জোয়ারের সময় পানির বৃদ্ধি পেলে ক্ষতিগ্রস্ত এসব বাঁধের কোন না কোন অংশ ধসে পড়ে। এই মুহুর্ত্বে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ সংষ্কার না করলে বড় ধরনের ভাঙনের মুখে পড়তে হবে এলাকাবাসীর। তিনি জনসাধারণের জানমাল রক্ষায় এই এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানান।

কাকবসিয়া খেয়াঘাটের মাঝি আব্দুল খালেক গাজী ও মোঃ মফিজুল ইসলাম জানান, ফজরের নামাজ আদায় করে আমরা খেয়াঘাটে আসি। রাতের জোয়ারের পানি নামার সাথে সাথেই বেড়িবাঁধে ফাটল ধরা শুরু হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই ইটের সোলিংয়ের রাস্তা ও যাত্রী ছাউনীসহ ঘাটের পাড়ের তিনশ ফুট জায়গা জুড়ে বাঁধের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার না করলে নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে।

স্থানীয় চেউটিয়া গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী রোকন সানা অভিযোগ করে বলেন, একই স্থান থেকে গত তিন বছরে তিনবার ভেঙেছে। যখনই ভাঙে তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করার পর সেই স্থানে মাটি দিয়ে যায়। আগে থেকে কোন কাজ তারা করে না। ভাঙনের পর দুদিন পার হলেও পানি উন্নয়ন উন্নয়ন বোর্ডের লোক বা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এখনো দেখা যায়নি।

আনুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস জানান, খেয়াঘাট সংলগ্ন ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধটি দ্রুত সংস্কার না করলে আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও খাজরা ইউনিয়নের প্রায় ৪০ প্রামের পঞ্চাশ হাজার মানুষের প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কৃষ্ণা রায় জানান, খোলপেটুয়া নদীর কাকবসিয়া খেয়াঘাট এলাকায় ভাঙনের কথা শোনা মাত্রই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাকবসিয়া এলাকায় বাঁধ সংষ্কারের কাজ শুরু করা হবে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশাশুনি এলাকার দায়িত্বে থাকা সেকশনাল (এসও) অফিসার মোমেন আলী বলেন, ভাঙনের খবর পেয়েই আমারা ভাঙন কবলিত কাকবসিয়া এলাকা পরিদর্শন করেছি। এই এলাকার বেড়িবাঁধের ভাঙন প্রতিরোধে নকশা তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, আশাশুনিতে বেড়িবাঁধে ভাঙনের বিষয়টি শোনা মাত্র সেখানকার দায়িত্বে থাকা এসও কে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!