খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ পৌষ, ১৪৩১ | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চাঁদপুরে জাহাজে ৭ জনকে হত্যা: আসামি ইরফান ৭ দিনের রিমান্ডে
পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন

খুলে গেলো দখিনের দরজা

সানোয়ার পারভেজ

২৫ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল আনন্দময় ঐতিহাসিক সাফল্যের দিন। সুদীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর অবশেষে খুলে গেল স্বপ্নের পদ্মাসেতুর প্রবেশ দরজা। পদ্মাসেতু আজ আর স্বপ্ন নয়। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতিক্ষিত স্বপ্নের পদ্মাসেতুর শুভ উদ্বোধন করলেন আজ। জাতীয় গৌরবের এক মাইলফলক হিসেবে ইতিহাসে স্থান দখল করে নিলো আজকের এই দিনটি। পদ্মাসেতু শুধুমাত্র লোহা আর কংক্রিটে তৈরি একটি স্থাপনাই নয়, বরং এটি বাঙালী জাতির আবেগ, সাফল্য আর গৌরবের এক মূর্ত প্রতীক।

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু নির্মাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত করেন। তাঁর অসীম সাহস আর বলিষ্ট নেতৃত্বে আজ বাস্তবে রুপ নিয়েছে স্বপ্নের পদ্মাসেতু।

সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ টি অবহেলিত জেলাকে সড়ক পথে সংযুক্ত করেছে রাজধানীর সাথে। এসব অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়ক হয়েছে এই পদ্মা সেতু। যদিও উন্মত্ত পদ্মায় সেতু নির্মাণের কাজটি মোটেও সহজ ছিল না। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে ১২২ মিটার উচ্চতার এক একটি পিলার নদীগর্ভে পাইলিংএর মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে এই পদ্মা সেতু। খরস্রোতা নদীর বুকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেতু আমাদের এই পদ্মা সেতু।

কেবল পদ্মা নদীর উত্তাল স্রোত নয়, দেশী বিদেশী নানান ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় সংকল্পের কারণে আজ এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০ হাজার কোটি টাকার নিজস্ব অর্থায়নে এই স্বপ্নের পদ্মাসেতু নির্মাণ সম্পন্ন করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিলেন সাহস আর সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে সকল প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে সাফল্যের গৌরব অর্জন করা সম্ভব।

যতোদিন পদ্মা নদী থাকবে, আর যতোদিন তার বুকের ওপর দিয়ে এঁকে বেঁকে সুদৃশ্য পদ্মাসেতু গৌরবের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে, ততোদিন বাঙালী জাতির প্রাণস্পন্দনের মতো গৌরবের মহা সাক্ষি হয়ে দীপ্তি ছড়াবে এই পদ্মাসেতু। পদ্মাসেতু আমাদের মহা গৌরব আর অহংকার।

জাতীয় অর্থনীতিতেও পদ্মাসেতুর বিষ্ময়কর অবদান থাকছে। জিডিপি বৃদ্ধি, যোগাযোগ ব্যবস্থা আর দারিদ্র বিমোচনেও অসাধারণ ভুমিকা রয়েছে পদ্মাসেতুর। সেইসঙ্গে এটাও গৌরবের বিষয় যে, এই সেতু নির্মাণে দেশের সর্বস্তরের প্রতিটি মানুষের অতি ক্ষুদ্র হলেও আর্থিক অংশগ্রহণ রয়েছে। এই মহতী কর্মযজ্ঞে সামান্যতম অংশগ্রহণ করতে পেরেও আমরা কৃতার্থ।

সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে যেমন বহুবিধ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়েছে, সেতু নির্মাণ শেষেও সে ষড়যন্ত্র থেমে থাকবে এমন নয়। তাই আমাদের সকলকে সর্বদা সজাগ দৃষ্টি মেলে রাখতে হবে।

কোটি কোটি মানুষের স্বপ্ন পূরণে বাস্তব পদক্ষেপ নেয়ায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এক অসম্ভবকে সম্ভব করে বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশকে যে উচ্চতায় তিনি পৌঁছে দিয়েছেন তা সকল প্রসংশার উর্ধে।

আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ আয়ু, সুস্বাস্থ্য আর সার্বিক সাফল্য কামনা করি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাতীত অন্য কারও পক্ষেই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হতো না বলে আমরা বিশ্বাস করি।

সবশেষে আবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা এবং তাঁর পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করছি। বাংলাদেশ চিরজিবি হোক।

 

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!