খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে সংবাদের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের ভাষ্য

গেজেট ডেস্ক

সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কয়েকটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়ায় যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ ব্যাপারে জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আতিয়ার রহমান প্রেরিত ই-মেইলে বলা হয়েছে, প্রকাশিত সংবাদে উল্লিখিত তথ্য সঠিক নয়। এর ফলে তা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার আশংকা রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সবার বিভ্রান্তি নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত সংবাদের ব্যাপারে নিম্নোক্ত বক্তব্য প্রদান করেছে :

বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিকাশমান স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও অবকাঠামোগত পরিসর বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে নতুন নতুন বিষয় খোলা, অফিস চালু, গবেষণা ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর ফলে শিক্ষকসহ অন্যান্য জনবলের চাহিদা পূরণে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত জনবলের সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র কাছে প্রদত্ত চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বরাদ্দকৃত পদে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগ প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুয়ায়ী সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত নিয়োগ-নীতিমালা অনুসরণ করেই এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়োগ বোর্ডে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সদস্য হিসেবে উপস্থিত থাকেন।

সম্প্রতি প্রকাশিত সংবাদে নিয়োগ-নীতিমালার শর্ত শিথিলের যে তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। বরং ২০০৩ সালে ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় যে নীতিমালা অনুমোদিত হয় সেখানে অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনটি শর্ত শিথিলের বিষয় অন্তর্ভূক্ত ছিলো, যা বর্তমান প্রশাসনের আমলে ২০১৩ সালে ১৬৭ তম সিন্ডিকেট সভায় এ সুযোগ সীমিত করা হয়। এছাড়া ৯ম গ্রেডে নিয়োগ প্রার্থীদের বেলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাসের ক্ষেত্রে ২টি দ্বিতীয় শ্রেণির স্থলে বর্তমান নিয়োগ-নীতিমালায় কমপক্ষে একটি ১ম শ্রেণি অন্তর্ভূক্ত করে নীতিমালা অধিকতর মানসম্পন্ন করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা একটি মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপযোগী করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অভ্যন্তরীণ প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে এবং যে পদ সংখ্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এখানে কেবলমাত্র কর্মচারী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি উল্লেখ আছে। কর্মকর্তাদের কোনো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা উল্লেখ নেই।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক পরিসর বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান এবং বিভিন্ন বিভাগ থেকে চাহিদার ভিত্তিতে এবং প্রয়োজনীয়তার নিরিখে ৪র্থ শ্রেণির ঝাড়ুৃদার, নিরাপত্তা প্রহরী, অফিস সহায়ক, ল্যাব এ্যাটেনডেন্ট এর মতো কিছু সংখ্যক পদে কিছু লোককে বিভিন্ন সময়ে মাস্টাররোল ও থোক ভাতায় কাজ দেওয়া হয়। এমন অনেক সংখ্যক ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও পদের সীমাবদ্ধতার কারণে তাদেরকে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়া যায়নি। এ প্রেক্ষিতে ইউজিসির কাছে বিষয়টি উল্লেখ করে পদ চাওয়া হলে সম্প্রতি কিছু পদ বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং সেখানে যারা দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত আছেন তাদেরকে নিয়মিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ কারণে এসব পদে কেবলমাত্র অভ্যন্তরীণ প্রার্থীরাই এক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বাইরের প্রার্থীরা যেন প্রতারিত না হন বা তাদের অর্থ, সময়, শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তি না হয় সে জন্যই এ ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয়। অভ্যন্তরীণ বা বিভাগীয় প্রার্থীদের বেলায় এমন ধরণের অগ্রাধিকারের শর্ত অন্য অনেক সরকারি বা স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও উল্লেখ থাকে। এখানে অত্যন্ত স্পষ্ট করে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, কোনো ক্ষেত্রেই উপাচার্যের কোন পছন্দের প্রার্থী নেই।

নিয়োগ বাছাই বোর্ডের যে সুপারিশ আজ ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন পায় সেখানে দেখা যায়, নিরাপত্তাপ্রহরী পদ ছাড়া অন্যান্য সকল পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের চেয়ে বাইরের প্রার্থীরা নিয়োগ পেয়েছে বেশি। এমনকি, এমন অনেক পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অভ্যন্তরীণ প্রার্থীই সুযোগ পাননি। তা হলে ‘অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের নিয়োগের জন্যই শর্ত শিথিল করা হয়েছে বা পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া’ মর্মে যে অভিযোগমূলক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতীয়মান হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট প্রসঙ্গে যে কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে কোনো প্রশ্ন সৎ সাহসের সাথে উত্তর দিতে সদা প্রস্তুত। ২০০৭ সালের পরে বর্তমান প্রশাসনের আমলেই ২০১৮ সালে সিনেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২০ সালে সিনেট সভার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে তা স্থগিত রাখা হয়। পরিস্থিতি অনুকূল হলেই কর্তৃপক্ষ সিনেট সভার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট সকল মহলের প্রতি অনুরোধ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশের আগে তথ্য যাচাই করা হলে জনমনে বিভ্রান্তির সুযোগ থাকে না। একই সাথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মর্যাদাশীল প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় না।

 

খুলনা গেজেট/এনএম

 

 

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!