খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

খুলনা বিভাগে নৌকা পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য তিন হাজার ৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে খুলনা বিভাগের ৩৬টি আসনের বিপরীতে মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ৪১৬টি। এসব মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মাঝে আছেন আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সাবেক-বর্তমান একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক মন্ত্রী, সাবেক-বর্তমান সংসদ সদস্য, ক্রিকেটার, চিত্রনায়ক, আইনজীবী ও সাবেক আমলা প্রমুখ।

খুলনা বিভাগের ৩৬টি আসনে কে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন সেই তালিকা প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে আগামীকাল রোববার (২৬ নভেম্বর)। এদিন সকাল ১০টায় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভার পর মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা গেছে, খুলনা বিভাগের সংসদীয় আসনগুলো থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ; শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান; সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বপন ভট্টাচার্য্য; সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক, বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ; বর্তমান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, হুইপ ও বর্তমান সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস।

এছাড়া মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দুই কিংবদন্তি খেলোয়াড় মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান। আর চিত্রনায়ক শাকিল খানসহ আসনগুলোতে রয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্যের বিপরীতে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী।

এদিকে খুলনা বিভাগের ৩৬টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দীন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল ও শেখ হেলাল উদ্দীনের ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়।

দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এবার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনগণের কাছে যার গ্রহণযোগ্যতা আছে তাকে প্রাধান্য দেওয়া দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে নৌকা প্রতীকে নতুন নতুন মুখের সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন সমীকরণ মিলিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীতায় এবার চমক থাকতে পারে বলে জানা গেছে।

খুলনা

খুলনা জেলার ছয়টি আসন থেকে প্রায় ৬০ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস। তবে তার আসনে মনোনয়নের দৌড়ে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই, বিসিবির পরিচালক শেখ সোহেল এবং কেন্দ্রীয় সদস্য ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার। আরও পাঁচ নেতা দলের মনোনয়ন চাইলেও তাদের সম্ভাবনা কম বলে জানা গেছে।

খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে আওয়ামী লীগের একমাত্র মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল।

খুলনা-৩ (দৌলতপুর-খালিশপুর-খানজাহান আলী) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সর্বশেষ একাদশ সংসদে তিনি পুনরায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তবে এবার তার দুশ্চিন্তার কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এবং বর্তমান সেনাপ্রধানের বোন অধ্যাপক রুনু ইকবাল বিথার। মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও আলোচনায় নেই অন্য তিন নেতা।

খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি সফিকুর রহমান পলাশ। এই আসনে অন্য নেতাদের নিয়ে আলোচনা কম।

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ। তিনি ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে নারায়ন চন্দ্র চন্দের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। এই আসনে আরও ১১ নেতা মনোনয়ন ফরম নিলেও তাদের সম্ভাবনা কম বলে জানা গেছে।

খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আখতারুজ্জামান বাবু। তবে তার বিরুদ্ধে মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব আলী সানা, ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলাম রাসেল এবং ইঞ্জিনিয়ার জিএম মাহবুবুল আলম।

বাগেরহাট

বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-ফকিরহাট) আসনে এককভাবে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন। এই আসনে আর কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি।

বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর ও কচুয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময় ছাড়া আর কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি।

বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। এছাড়া রয়েছেন চিত্রনায়ক শাকিল খান (শাকিল আহসান), জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইদ্রিস আলী এবং বিসিবির পরিচালক শেখ সোহেল।

বাগেরহাট-৪ (মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য বর্তমান সংসদ সদস্য আমিরুল আলম মিলন। এছাড়া আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জামিল হোসাইন এবং ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ।

নড়াইল

নড়াইল জেলার দুটি আসনে মনোনয়ন চেয়েছেন মোট ৩২ জন। এর মধ্যে নড়াইল-১ (সদরের একাংশ ও কালিয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য বিএম কবিরুল হক মুক্তি সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছেন মনোনয়নের দৌড়ে। তিনি টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। এছাড়া এই আসনে আলোচনায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন খান নীলু ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সরোয়ার হোসেনও।

নড়াইল-২ (নড়াইল পৌরসভা, নড়াইল সদরের একাংশ ও লোহাগড়া) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, ক্রিকেটার এবং বর্তমান সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা। এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা ২১ জন হলেও পুনরায় মাশরাফিই বহাল থাকার সম্ভাবনা প্রবল। এরপরই আলোচনায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এসএম আসিফুর রহমান বাপ্পী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন খান নীলু।

যশোর

যশোর থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ৬৯ জন নেতাকর্মী। এর মধ্যে যশোর-১ (শার্শা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের। তার সঙ্গে মাঠে আছেন বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

যশোর-২ (ঝিকরগাছা ও চৌগাছা) আসন থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির। তবে প্রচারণা এবং দলীয় সমর্থনে এগিয়ে রয়েছেন এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব) ডা. নাসির উদ্দীনও। অপরদিকে তৃণমূলের জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোস্তফা আশিষ ইসলাম।

যশোর-৩ (সদর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। এছাড়া রয়েছেন জেলা আওয়ামী সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনও।

যশোর-৪ (বাঘারপাড়া ও অভয়নগর) আসনে জনপ্রিয়তায় সমানতালে এগিয়ে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ ও বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায়।

যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বপন ভট্টাচার্য্য। একই আসনে রয়েছেন তার ভাতিজা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন।

যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। এছাড়া মনোনয়ন তুলেছেন জেলা পরিষদের সদস্য আজিজুল ইসলাম ওরফে খন্দকার আজিজ। নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করেছেন।

কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার চারটি সংসদীয় আসন থেকে ৪১ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সারোয়ার জাহান বাদশা এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী।

কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের আওয়ামী লীগের নৌকার মনোনয়ন পেতে চান ছয়জন। এই আসনে টানা তিনবার মহাজোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এবার আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা আসনটি জাসদকে ছেড়ে দিতে নারাজ। তারা আওয়ামী লীগের কাউকে নৌকা প্রতীক দিতে কেন্দ্রে যোগাযোগ করছেন। এই আসনে দলীয়ভাবে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. ইফতেখার মাহমুদ এবং মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন।

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসন থেকে এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এবং সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য, প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম। শেখ মুজিবুর রহমানের তৃতীয় মন্ত্রিসভায় আমীর-উল ইসলাম খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। প্রথম জাতীয় সংসদে তিনি এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, বাংলাদেশের প্রথম সরকারের ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের রচয়িতা ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামের মেয়ে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফের মধ্যে কেউ একজন মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।

মাগুরা

মাগুরা জেলার দুইটি আসনে মনোনয়ন কিনেছেন ২৫ জন। এর মধ্যে মাগুরা-১ (মাগুরা-শ্রীপুর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বতর্মান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নেতৃত্বের দিক দিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখরের বিকল্প দেখছেন না।

মাগুরা-২ (মহাম্মদপুর-শালিখা) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বতর্মান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট বীরেন শিকদার। এই আসন থেকে তিনি চারবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া এই আসনেও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান মনোনয়ন ফরম তুলেছেন।

সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় চারটি আসনে মনোনয়নপত্র কিনেছেন ৪৪ জন। এর মধ্যে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান। এরপরই রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক সরদার মুজিব।

সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম এবং সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু।

সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি-দেবহাটা-কালিগঞ্জের আংশিক) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম।

সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালিগঞ্জের আংশিক) আসনে এগিয়ে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার, শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদ মেহেদী।

ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ জেলার চারটি আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ফরম জমা দিয়েছেন ৪৫ জন। এর মধ্যে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন। তিনি এবার মনোনয়ন পেলে ৫ম বারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন করবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ কামরুজ্জামানের মেয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, বিশ্বাস বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার সম্ভাবনার তালিকায় রয়েছেন।

ঝিনাইদহ-২ (সদরের একাংশ-হরিণাকুন্ডু) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু এবং বর্তমান সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি। এছাড়া আছেন সাবেক সংসদ সদস্য সফিকুল ইসলাম অপু।

ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব সালাহউদ্দিন মিয়াজি এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নবী নেওয়াজ।

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বিজু।

চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গার দুইটি আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন ৩২ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা-১ (সদর ও আলমডাঙ্গা) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। এছাড়া আলোচনায় আছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস।

চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা ও জীবননগর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগর টগর। এছাড়া আলোচনায় আছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ।

মেহেরপুর

মেহেরপুরের দুইটি আসনে নৌকার মাঝি হতে ২৬ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে মেহেরপুর-১ (সদর এবং মুজিবনগর) আসনে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুস শুকুর ইমন ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম।

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন রয়েছেন জনপ্রিয়তায় এগিয়ে। এছাড়া রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমাম মুকুলও।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!