পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আর এক সপ্তাহ বাকী। এ সময়ের মধ্যে পরিবহনগুলো খুলনা-ঢাকার ভাড়া চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে গ্রীনলাইন খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়ার ভাড়া ঘোষণা করেছে। আগামী ২৬ জুন থেকে ওই পরিবহন এ ভাড়া কার্যকর করবে। এরআগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গত ১৭ মে পদ্মা সেতু দিয়ে যাত্রী পারাপারের বিষয়ে একটি গেজেট প্রকাশ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর পিলারে আঘাতের পর থেকে নদীতে ফেরী চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে হানিফ, ঈগল ও সোহাগ পরিবহনের গাড়ি মাওয়া দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। গ্রীনলাইন, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, বনফুল ও ইমাদসহ কয়েকটি পরিবহন লঞ্চ পারাপারে যাত্রী বহন করে থাকে। এ রুটে নন এসি থেকে এসি বাসে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে ভাড়া কিছুটা কমতে পারে বলে পরিবহন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গ্রীন লাইন পরিবহন খুলনার ম্যানেজার মো: আইয়ুব হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, বর্তমানে ইকোনোমি শ্রেণির ৪ টি গাড়ি এ রুটে চলাচল করে। ভাড়া হিসেবে প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ১০০০ টাকা নেওয়া হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে ভাড়া কমে যাবে। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করে বলেন, লঞ্চভাড়া বাবদ তাদের ৪ হাজার টাকা গুনতে হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে সে টাকা আর তাদের খরচ হবে না। সরকার গাড়ির টোল নির্ধারণ করেছেন ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা। সেক্ষেত্রে তারা ইকোনোমি শ্রেণিতে ভাড়া ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সেতু চালু হলে ডাবল ডেকার ও বিজনেস ক্লাসের মতো গাড়ি খুলনায় চলাচল করবে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি সিটের ভাড়া ১২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ গাড়িগুলো আগামী ২৩ জুনের মধ্যে খুলনা নগরীতে প্রবেশ করবে।
সোহাগ পরিবহনের ইনচার্জ মো: ইয়ামিন বলেন, লঞ্চ পারাপারে তাদের কোন গাড়ি নেই। গোপালগঞ্জ ভাঙ্গা হয়ে আরিচা পার হয়ে তাদের গাড়ি ঢাকায় যায়। পদ্মা সেতু চালু হলে তারাও এ রুট ব্যবহার করবে। ভাড়ার বিষয়ে এখনও কোম্পানী কোন সিদ্ধান্ত আমাদের জানায়নি। তবে সেতু চালু হলে তারা যাত্রীদের মতামত নিয়ে একসপ্তাহ এ রুটে গাড়ি চালাবেন। যাত্রীরা যদি এ পথ ব্যবহার করতে চান তাহলে তারা সেতু ব্যবহার করবেন। পরবর্তীতে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। এ পরিবহন কোম্পানীও আধুনিক ও উন্নত মানের গাড়ি সংযোজন করবে বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।
হানিফ পরিবহনের ম্যানেজার শাওন বলেন, ভাড়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। তবে আরিচা রোডের থেকে এ রুটের ভাড়া কম হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের জি এম গোলাম ছামদানি বলেন, ইতিমধ্যে তাদের ১০ টি আধুনিক গাড়ি খুলনায় চলে এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এ গাড়িগুলো আগামী ২৬ জুন সকালে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদেশ্যে রওনা হবে। ভাড়ার বিষয়ে কোম্পানী তাকে কিছু জানায়নি। তিনি আরও বলেন, সরকার পক্ষ থেকে ভাড়ার যে চার্ট দেওয়া হয়েছে সেটি তিনিও দেখেছেন। কিন্তু এটি কার্যকর করা হবে কি না তা তিনি বলতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে খুলনা-ঢাকা নন এসি ৬০০ টাকা, এসি ৭০০ টাকা ও বিজনেস শ্রেণিতে ৯০০ টাকা নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে ঢাকা (সায়েদাবাদ)-খুলনা ৬৫০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ