খুলনা ১০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ধারণক্ষমতার বাইরে রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে ১০০ শয্যার হাসপাতালে ১১৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। আর আইসিইউতে রয়েছেন সাতজন। তবে হাসপাতালে বেড়েছে আইসিইউয়ের সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুহাস রঞ্জন হালদার। এদিকে খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫৬ জনে।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, আমি দায়িত্বগ্রহণের পর আজ সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি রয়েছে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে। গত কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ১১৫ জন রোগীর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে রেড জোনে ৮৮ জন ও উপসর্গ নিয়ে ইয়োলো জোনে ভর্তি ২৩ এবং ভারত থেকে আসা চারজন ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে সাতজন আইসিইউতে এবং চারজন এইচডিইউতে রয়েছেন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪৬ জন।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দশ দিনে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এর মধ্যে ২৫ মে সকালে হাসপাতালে ৭৫ জন, ২৬ মে ৭৮ জন, ২৭ মে ৮০ জন, ২৮ মে ৮২ জন, ২৯ মে ৯১ জন, ৩০ মে ৭৭ জন, ৩১ মে ১০১ জন, ১ জুন ৯৯ এবং ২ জুন ১০৯ জন ভর্তি ছিলেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) সকালে ১১৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন।
খুলনা সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। ঈদের আগে আশঙ্কা করা হচ্ছিল সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। তখন থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে এবং মাস্ক পরিধানে মানুষকে সচেতন করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। ঘরের বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। মাস্ক ছাড়া কোনোভাবেই চলাচল করা যাবে না।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ মার্চ বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায়। করোনাভাইরাস শনাক্তের এক বছর ২ মাস ১৬ দিন পর রোগীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ২৪১ জনের।
এ নিয়ে বিভাগের ১০ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ১১৩ জন। এ সময়ে করোনায় সংক্রমিত হয়ে তিনজন মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫৬ জনে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩১ হাজার ৬২১ জন।
এদিকে বিভাগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে খুলনা জেলা শীর্ষে রয়েছে। এ পর্যন্ত খুলনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪১৬ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ২৮৪ জন।
এ ছাড়া বাগেরহাটে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৬৯ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪২৯ জন। সাতক্ষীরায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭১০ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৮৪ জন।
যশোরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ১৩৬ জন। মারা গেছেন ৮১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৪৩৩ জন। নড়াইলে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৯০ জন। মারা গেছেন ২৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮১৫ জন।
মাগুরায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৬৬ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২০৯ জন। ঝিনাইদহে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯২৬ জন। মারা গেছেন ৫৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭৩৬ জন।
কুষ্টিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৬২ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৬৭১ জন। চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার জন। মারা গেছেন ৬২ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮২০ জন।
সর্বনিম্নে রয়েছে মেহেরপুর। এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৮ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৮৪০ জন।
খুলনা গেজেট/ এস আই