খুলনা মহানগর বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপ সামাল দিতেই মানুষ যখন দিশাহারা ঠিক তখনই মধ্যবিত্তের টানাপড়েনের সংসারে নতুন দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছে খুলনা ওয়াসা। পানির মূল্যবৃদ্ধিকে অযৌক্তিক ও গণবিরোধী উল্লেখ করে তারা বলেন, নিরবচ্ছিন্নভাবে সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা খুলনা ওয়াসার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ওয়াসা সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। অযৌক্তিকভাবে বারবার পানির মূল্যবৃদ্ধি তাদের ধারাবাহিক কর্মকান্ডে পরিণত হয়েছে।
শনিবার (২৩ জুলাই) প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, পানি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা এই সংস্থা গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়িয়েছে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ যা আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। পরিবর্তিত মূল্য অনুযায়ী, আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি ইউনিট (এক হাজার লিটার) পানি ব্যবহারের জন্য দিতে হবে ৮ টাকা ৯৮ পয়সা। আর বাণিজ্যিক গ্রাহককে দিতে হবে ১৪ টাকা। এর সঙ্গে আছে সার্ভিজ চার্জ, ডিমান্ড চার্জ ও ভ্যাট। সর্বশেষ মূল্য অনুযায়ী আবাসিকে পানির দর ছিল ৬ টাকা ৯১ পয়সা এবং বাণিজ্যিক দর ছিল প্রতি ইউনিট ১০ টাকা। সে হিসাবে আবাসিকে পানির দর বেড়েছে ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য দাম বেড়েছে ২৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পানির মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতারা বলেন, গ্রাহকসেবা আইন অনুযায়ী সেবার দাম বৃদ্ধির আগে অবশ্যই গণশুনানি করতে হয়। ওয়াসায় এ ধরনের কোনো শুনানি হয়েছে বলে কারও জানা নেই। নতুন মূল্য কার্যকর হলে মানুষের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়বে।
নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালে ১ জানুয়ারি ৪ টাকা ইউনিট ধরে পানির নতুন মূল্য তালিকা অনুমোদন করে ওয়াসা বোর্ড। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি পানির দাম ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়। এতে পানির দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ৮০ পয়সা। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে পানির দাম আরও ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়। এতে ইউনিট প্রতি মূল্য দাঁড়ায় ৫ টাকা ৭৬ পয়সা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আরও ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি করে ওয়াসা। এতে প্রতি ইউনিট পানির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬ টাকা ৯১ পয়সা। গত আড়াই বছর এই মূল্যই কার্যকর ছিল। গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করে অবিলম্বে খুলনা ওয়াসার দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করে পুর্বের মুল্যে নগরবাসীর জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিদাতারা হলেন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. তারিকুল ইসলাম জহির, যুগ্ম আহবায়ক কাজী মো. রাশেদ, স ম আব্দুর রহমান, সৈয়দা রেহানা ঈসা, এ্যাড. নুরুল হাসান রুবা, কাজী মাহমুদ আলী, আজিজুল হাসান দুলু, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, মাহবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ প্রমুখ।
খুলনা গেজেট / আ হ আ