খুলনায় মাস্ক না পরায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ৬৩ মামলায় ২৬ হাজার ৫শ’ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে আটক করা হয়েছে ৪৩ জনকে। বুধবার (১৮ নভেম্বর) করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসনের অভিযানের দশম দিনে ছিল অনন্য উদ্যোগ।
জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের নির্দেশে এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যজিষ্ট্রেট মো. ইউসুপ আলীর তত্ত্বাবধানে দৌলতপুর বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালিত হয়। মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রাকিবুল হাসান, দেবাশীষ বসাক এবং শারমিন জাহান লুনা। এছাড়া খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালিত হয়।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে দরিদ্র্য মাস্কবিহীন মানুষকে মাস্ক বিতরণ করা হয়। মাস্ক সাথে না থাকায় এবং যথাযথভাবে মাস্ক পরিধান না করায় ৪৩ জনকে আটক করা হয় এবং মাস্ক পরিধান না করার দায়ে ৬৩ জনকে মোট ২৬ পাঁচশ’ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮’ এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান মোতাবেক এসব জরিমানা করা হয়।
অনন্য উদ্যোগ : মহানগরীর বিভিন্ন জনসমাগমপূর্ণ স্থানে মাস্ক পরিধান নিশ্চিতকরণে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এতে নেতৃত্ব প্রদান করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক। কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাস্ক-বিহীন অসংখ্য মানুষকে চলাফেরা করতে দেখেন। এসব মানুষের কিছু সংখ্যক আর্থিকভাবে স্বচ্ছল অথচ অসচেতনভাবে মাস্ক পরিধান করেন না। কিছু মানুষ আছেন যারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরিধানের নিমিত্তে নিয়মিত মাস্ক ক্রয়ের ক্ষমতা রাখেন না। এরকম পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের এক অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। স্বচ্ছল অথচ মাস্ক পরার বিধান অমান্যকারী ব্যক্তিদেরকে জরিমানা আরোপ না করে সেই অর্থে মাস্ক ক্রয় করে গরীব-দুঃখী মানুষকে বিতরণ করতে বলা হয়। আইন অমান্যকারী স্বচ্ছল ব্যক্তিরা নিজ অর্থে মাস্ক ক্রয় করে রিক্সাচালক, দিনমজুর, ভিক্ষুকসহ অসহায় গরীব মানুষকে মাস্ক বিতরণ করেন।
এছাড়াও অপ্রাপ্ত বয়স্ক আইন অমান্যকারীর অভিভাবকদের ফোন করে তার পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে এবং মাস্ক পরিধান ব্যতীত বাড়ির বাইরে বের না হওয়া নিশ্চিত করতে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অপরদিকে কিছু দোকানে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ক্রয়-বিক্রয় করায় দোকান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই মনিটরিং কার্যক্রমে সহায়তা করেন দৌলতপুর থানা পুলিশের সদস্যরা।
সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় গত ৮ নভেম্বর খুলনা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ৯ নভেম্বর থেকে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থা গ্রহণ করে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা করেন এপিবিএন, দৌলতপুর থানা পুলিশ এবং উপজেলাসমূহে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিস সদস্যরা। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসনের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
খুলনা গেজেট /এমএম