খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

খুলনায় ভোজ‌্য তেলের বাজার অস্থির, ঈদের আ‌গেই ডাবল সেঞ্চু‌রি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের আগে আবারও সয়াবিন ও পাম ওয়েলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশী দামে পাইকারী ও খুচরা বাজারে এ পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে। আবার অনেক খুচরা দোকানেও বোতলজাত সয়াবিন তেলের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে খুচরা ও পাইকারী দোকান মালিকদের অভিযোগ, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও তেলকল মালিক এ সংকট সৃষ্টি করছে।

নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি খোলা তেল বর্তমানে ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানীরা। অথচ গত ২৩ এপ্রিল এ পণ্যটি বিক্রি করা হয়েছে ১৭৫ টাকায়। বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল ১৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৬৫ টাকায়। প্রতিমণ পাম ওয়েলে বেড়েছে ৫০০ টাকা।

বড় বজারের ব্যবসায়ী শেখ মো: শাহ আলম সরদার বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে শতকরা ৮৫% পাম ওয়েল আমাদের দেশে আমদানি করা হয়। সয়াবিন তেলের প্রভাব কিছুটা পাম ওয়েল দিয়ে পূরণ করা হয়। ইন্দোনেশিয়া হঠাৎ পাম ওয়েলের রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে সয়াবিন তেলের উপর। বাজার স্থির হওয়ার কোন লক্ষণ নেই। মূল্য বৃদ্ধির আগে এ ব্যবসায়ী প্রতিমণ সয়াবিন ৬৮০০ টাকায় কিনলেও বর্তমানে তাকে একই পরিমাণ ৭১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অনুরুপভাবে পাম ওয়েল ৬০০০ কিনলে বর্তমানে তাকে ৬৫০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বাজারের অপর এক ব্যবসায়ী খোলা সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির জন্য সরাসরি মিল মালিকদের দায়ী করেছেন। তারা সরকারের কোন নির্দেশ মানছেন না। তিনি আরও বলেন, রমজানের শুরুতে তেলের দাম বেড়েছিল। কিন্তু সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে দাম কমে ১৫৮ টাকায় নেমে যায়। কিন্তু কোন ঘোষণা ছাড়াই গত একসপ্তাহ ধরে তেলের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।

রূপসা বাজারের ব্যবসায়ী মো: নান্টু মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তেলের বাজার অস্থির। এক সপ্তাহে এ পণ্যটির দাম তিনবার বেড়েছে। প্রথমদিকে তিনি ১৭২ টাকা পরে ১৮০ টাকা ও সর্বশেষ ১৯২ টাকায় প্রতিকেজি তেল কিনতে হয়েছে। বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। বর্তমনে বোতলে সয়াবিন তেল কিনতে গেলে কোম্পানীর কর্মকর্তারা বিভিন্ন ফর্দ ধরিয়ে দিচ্ছে। তেল নিতে গেলে চিনিগুড়া চাল, হলুুদ না হয় গুড়া মরিচ নিতে হয়। এমনি ব্যবসায়ে লস আছে তার ওপর এ সকল পণ্য নেওয়ায় আরও লস হচ্ছে তার। তাই তিনি বোতল এ পণ্যটি না নিয়ে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। প্রতিকেজি খোলা সয়াবিন তিনি ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। এ দরে বিক্রি না করলে তার লস হবে।

রূপসা বাজারে কথা হয় পাইকারী বাজারের মাছ বিক্রেতা মেহেদী হাসানের সাথে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রতিসপ্তাহে এ পণ্যটির দাম বাড়ছে। গতবার তিনি এই বাজার থেকে ১৭৮ টাকায় তেল কিনেছেন। আজ তেলের দাম শুনে রীতিমতো হতবাক হয়েছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে সেভাবে মানুষের আয় বাড়ছেনা। আয়ের তুলনায় ব্যায়ের পরিমাণ বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, অভাব শুধু নিম্ন আয়ের মানুষের এককভাবে লাগেনি। এখন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের দরজায় কড়া নাড়ছে। বাজার ব্যবস্থায় সরকারের দৃষ্টি নিবেদনের জন্য অনুরোধ করেছেন। না হলে মধ্যবিত্তরা মারা যাবে। কারণ তারা কারও কাছে হাত পাততে পারেনা।

উল্লেখ্য গত ২০ মার্চ ভোজ্য তেলের মূল্য নির্ধারণ করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে। সে সময় সরকার এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৬০ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৭৬০ টাকা ও প্রতিকেজি খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!