মহান বিজয় দিবসের খুলনায় বিএনপির দু’গ্রপের পাল্টাপাল্টি শোডাউন করেছে। বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নয়া আহবায়ক কমিটি নগরীতে শোডাউন করেছে। এরআগে সকালে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুর নেতৃত্বে নগরীতে শোডাউন করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে ও বিকালে পৃথক এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিকেলে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি৷ সমাবেশ ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরের পর একের পর এক মিছিল এসে জমায়েত হতে থাকে কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে। সময়ের ব্যবধানে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় জমায়েতস্থল।
দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণের পর রয়্যাল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালির অগ্রভাগে দাঁড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত ঊর্ধ্বে তুলে শ্লোগানে কন্ঠ মিলিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপি নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল।
দলীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে শফিকুল আলম মনা বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে রাজনীতিবীদরা যখন ব্যর্থ হয়েছিলেন তখন মেজর জিয়াউর রহমান অমিত দেশপ্রেমকে বুকে ধারণ করে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতারা যখন পলায়নপর সে সময় জিয়াউর রহমান নিজে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছেন, জাতিকে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, এই সরকার জিয়া পরিবারকে ভয় পায়। কারণ তাদের যেখানে ব্যর্থতা, সেখানেই জিয়া পরিবারের সফলতা। এজন্য অযোগ্য, ব্যর্থ, লুটেরা, ভোট ডাকাতির সরকার জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। তারা তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের সংগ্রামের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো পাতানো মামলায় বন্দি রেখে হত্যা করতে চায়।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সকল মামলা প্রত্যাহার করে তাকে দেশে ফিরে আসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সারা দেশের লাখ লাখ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিুরদ্ধে দায়ের হওয়া রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
সমাবেশে বক্তৃতা করেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, সাবেক এমপি অধ্যাপক ডা. গাজী আব্দুল হক, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, বিএনপি নেতা ফখরুল আলম, নগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী ও নগর যুগ্ম আহবায়ক তরিকুল ইসলাম জহির। এ সময় মঞ্চে অবস্থান নেন রকিবুল ইসলাম বকুল।
অপরদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু নেতৃত্বে নগরীর গল্লামারী স্বাধীনতাসৌধের শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের আশা-আকাঙ্খা ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার, গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার, কিন্তু তা হয়নি। কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকার গনতন্ত্রের কবর রচনা করে একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। আওয়ামী লীগ একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে বিরোধী দলকে নির্মূল করছে। খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করেছে। তিনি আজ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাকে বিদেশে চিকিৎসা করতে দেয়া হচ্ছে না।
মঞ্জু বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে যেখানে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে একটা গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র হিসেবে যেখানে মর্যাদা উঁচু করে ধরবে, সেখানে বিদেশী কর্তৃক, মানবাধিকার লঙ্ঘনে আমরা নিষেধাজ্ঞা পাচ্ছে। পৃথিবীতে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ নিয়ে সম্মেলন হয়, সেসব গণতান্ত্রিক সম্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায় না। এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গনতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার পূনঃপ্রতিষ্ঠা, জুলুমের শাসনের অবসান, দুর্বৃত্তায়ন-দুর্নিতী মূক্ত সমাজ ও রাজনীতি গড়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদার জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার আন্দোলন সফল করার শপথ গ্রহনের আহবান জানিয়েছেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, এড. এস আর ফারুক, এড. ফজলে হালিম লিটন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, এড. গোলাম মওলা, ইকবাল হোসেন খোকন, সাদিকুর রহমান সবুজ, নিজাম উর রহমান লালু, ইউসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ আহসান পরাগ, শামসুজ্জামান চঞ্চল, মজিবর রহমান ফয়েজ, কাজী শফিকুল ইসলাম শফি, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, আবু সাঈদ শেখ, রবিউল ইসলাম রবি, এড. মশিউর রহমান নান্নু, শরিফুল ইসলাম বাবু, এড. এমদাদুল হক হাসিব, নাজির উদ্দিন আহমেদ নান্নু, কাজী আব্দুল লতিফ, সামসুল আলম, বদরুল আনাম, হাসান মেহেদী রিজভী, শেখ জামিরুল ইসলাম জামিল, ইশহাক তালুকদার, শাহাবুদ্দিন মন্টু, আশরাফ হোসেন, এইচ এম আবু সালেক, আকরাম হোসেন খোকন, আলমগীর হোসেন বাদশা, শেখ জাকির হোসেন, মেজবাহ উদ্দীন মিজু, রবিউল ইসলাম রবি, মহিউদ্দীন টারজান, মোস্তফা কামাল, সাজ্জাদ আলী, ইমতিয়াজ আলম বাবু, আব্দুল আলীম, নাসির খান, আব্দুল জব্বার, তৌহিদুর রহমান খোকন, মজিবর রহমান, এড. আবুল হোসেন হাওলাদার, সাইমুল ইসলাম রাজ্জাক, বাচ্চু মীর, মনিরুজ্জামান মনি, মিজানুর রহমান খোকন, মেহেদী হাসান সোহাগ, আব্দুল হাকিম, রফিকুল ইসলাম শুকুর, বাবু মোড়ল, আব্দুর রব মুন্সি, ইকবাল হোসেন, রিয়াজুর রহমান প্রমূখ।