খুলনার বাজারে আরও একবার বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত ৯ দিনের ব্যবধানে এ পণ্যটির দাম বেড়েছে ১০ টাকা। বর্তমানে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। পেঁয়াজের বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। তবে বরাবারের মতো এবারও নিত্য এ পণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য ক্রেতারা ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ গত ৯ দিন আগে এ পণ্যটির দাম ছিল প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়ার পর থেকে এ পণ্যটি মূল্য পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে।
খুলনা সোনাডাঙ্গা ট্রাক টার্মিনালস্থ কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী আ: মালেক বলেন, ফরিদপুর মোকামে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা ধাপে ধাপে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন।
তিনি বলেন, আগের থেকে এ সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম বেশি। মোকাম থেকে তাকে ২৭৫০ টাকা দরে ১ মণ কিনতে হয়েছে।
ঝিনাইদহের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নুর ইসলাম জোয়ারদ্দার বলেন, বৃষ্টিতে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। ফরিদপুর মোকামগুলোতে এ পণ্যটির সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, এবার ৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ রোপন করেছিলেন। ঝিনাইদহ কৃষি অফিস থেকে যে বীজ পেয়েছেন তার অর্ধেক মাটিতে পঁচে গেছে। যা পেয়েছেন তা বাজারে বিক্রি করেছেন। বাজারে এনে তিনি ৭০ টাকায় বিক্রি করেছেন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বাজারের অপর ব্যবসায়ী বলেন, ঈদের আগ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমাদানি বন্ধ হয়। এরপর থেকে ধাপে ধাপে এ পণ্যটির দাম বাড়তে থাকে।
তিনি আরও বলেন, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ভাল ছিল, তবে দাম ৮০ টাকা হবে তা নয়। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্টদের খোঁজ নিতে অনুরোধ করেছেন। তা না হলে দাম লাগাম ছড়িয়ে যাবে।
ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা গোলাম রসুল বলেন, পাইকারী বাজার থেকে তাকে ৭০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। সেখানে আড়তদারী বাবদ কেজিতে ২ টাকা দেওয়া লাগে। এরপর বাজার থেকে বের হওয়ার জন্য রয়েছে অনুমতি খরচ। সবমিলিয়ে কেজিতে তার ৭৮ টাকা পড়ে। ৮০ টাকায় বিক্রি না করলে পেট বাঁচবেনা বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
টুটপাড়া কাঁচা বাজারের এক ক্রেতা বলেন, সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক বেশী। নিম্নবিত্ত উর্ধমুখী বাজারে খাবার হিসেবে যে ঝাঁল পোঁয়াজ ডলে খাবে তারও কোন উপায় নেই!
দিন মজুর আনারুল বলেন, দৈনিক শ্রম যা পান তা দিয়ে বর্তমানে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারপর দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি জীবনকে আরও পিছে ফেলে দিয়েছে। তিনি নিত্য পণ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি