পেঁয়াজের দামের উর্দ্ধগতির লাগাম টানতে সরকার ট্রেডিং কর্পোরেশান অব বাংলাদেশ (টিসিবি)র মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে। রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) খুলনা মহানগরীর ৫ টি স্পটে টিসিবি এ কার্যক্রম শুরু করেছে। শুক্রবার ও শনিবার বাদে আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রির এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর ময়লাপোতা মোড়, ডিসি অফিস সংলগ্ন রোড, শিববাড়ি মোড়, বয়রা বাজার মোড়, দৌলতপুর নতুন রাস্তা মোড়ে ডিলারের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করছে টিসিবি। একজন ভোক্তা নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি সর্বোচ্চ ২ কেজি করে কিনতে পারবেন। এছাড়া পেঁয়াজের সঙ্গে চিনি, মশুর ডাল ও সয়াবিন তেলও ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করছে টিসিবি।
প্রতি কেজি চিনি ও মশুর ডাল ৫০ টাকা কেজি দরে একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ ২ কেজি করে কিনতে পারছেন। এ ছাড়া সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮০ টাকা দরে একজন ভোক্তা দুই লিটার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটার পর্যন্ত কিনতে পারছেন। প্রথম দিনে ক্রেতাদের তেমন ভিড় লক্ষ করা যায়নি। সুশৃঙ্খলভাবেই ক্রেতারা পণ্য ক্রয় করছেন।
ময়লাপোতা মোড়ে টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে আসা জ্যোসনা বেগম বলেন, পেঁয়াজের মান ভাল, দামও বাজারের তুলনায় কম আছে। তবে তারা দুই কেজির বেশি পেঁয়াজ দিচ্ছে না। পরিমাণটা আরেকটু বেশি হলে ভাল হতো।
নগরীর শিববাড়ি মোড়ে ক্রেতা মোসলেম আলী জানান, পেঁয়াজের দাম আরেকটু কম হলে ভাল হতো। তবুও ভালো, বাজারের তুলনায় কম আছে।
নিত্যপণ্য বিক্রির দায়িত্ব পাওয়া মেসার্স কাশেম ইলেকট্রনিক্সের একজন কর্মচারী খুলনা গেজেটকে জানান, প্রতিদিন ২০০ কেজি পেঁয়াজ, ৫০০ লিটার সয়াবিন তেল, ৫০০ কেজি মসুর ডাল, ৬০০ কেজি চিনি বরাদ্দ রয়েছে।
খুলনা টিসিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি, করোনা, বন্যার কারণে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিসিবি পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। খুলনা মহানগরীর ৫টি স্পটে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৬ টা পর্যন্ত নায্যমূল্য পণ্য বিক্রি চলবে। পাশাপাশি আমরা টিসিবির পক্ষ থেকে এ কার্যক্রম তদারকি করছি। খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রির মাধ্যমে দেশে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, পেঁয়াজের দাম বাজারে একটু বেড়েছে। বন্যার কারণে সরবরাহে সমস্যা হয়েছে। আমরা দাম কমাতে চেষ্টা করছি। টিসিবি বড় পরিসরে নামছে। রোববার থেকে ন্যায্যমূল্যে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করবে টিসিবি। এ ছাড়া এবার আমরা সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বোচ্চ পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করব। আমরা ফুল মনিটর করছি।
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম ৪০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় পৌঁছে। আমদানিকারকরা ভারতের অন্ধপ্রদেশে বন্য ও পেঁয়াজের আড়তে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে দাবি করে। ফলে এর প্রভাব পড়তে থাকে দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে। সাধারণ মানুষকে পড়তে হয় বিপাকে। গুরুত্বপূর্ণ এ নিত্যপণ্যটি ক্রয় করতে ক্রেতাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) খোলা বাজারে ট্রাক সেলের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে, নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
খুলনা গেজেট / এমএম