মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরও নির্বাচনী উত্তাপ নেই খুলনায়। খুলনার ৬টি আসনেই এগিয়ে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। প্রতিটি আসনে গড়ে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ৬টি আসনের একটিতেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে না আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। সহজেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে পারবেন বলে মনে করছেন খুলনার মানুষ।
খুলনার ৬টি আসনে প্রার্থী হয়েছেন ১১টি দল মনোনীত ও স্বতন্ত্র ৫৩ জন। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টি মনোনীত ৬ জন করে প্রার্থী। প্রার্থী হয়েছেন গণতন্ত্রী পার্টির ১ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ৩ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ২ জন, ওয়ার্কার্স পার্টির ১ জন। চারটি কিংস পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন মোট ১১ জন। এর মধ্যে রয়েছে তৃণমূল বিএনপির ৩ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৪ জন, মুক্তিজোটের ১ জন ও বিএনএম’র ৩ জন। খুলনায় অতীতে এই চারটি দলের কোনো কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মোট ১৭ জন। এর মধ্যে ৮ জন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত।
খুলনা-১ আসনে প্রার্থী ৬ জন। আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন জাকের পার্টির মো. আজিজুর রহমান, জাতীয় পার্টির কাজী হাসানুর রশিদ, তৃণমূল বিএনপির গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার রায় ও শেখ আবেদ আলী। স্বতন্ত্র এ দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তবে আসনটিতে আ. লীগ মনোনীত প্রার্থীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
খুলনা-২ আসনে প্রার্থী ৯ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, গণতন্ত্রী পার্টির মো. মতিয়ার রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের দেবদাস সরকার, জাকের পার্টির ফরিদা পারভীন, ইসলামী ঐক্যজোটের হিদায়েতুল্লাহ, জাতীয় পার্টির মো. গাউসুল আজম, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বাবু কুমার রায়, বিএনএম’র মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, স্বতন্ত্র মো. সাঈদুর রহমান। শেখ জুয়েল ছাড়া অন্য ৮ প্রার্থী ভোটের মাঠে নতুন মুখ।
খুলনা-৩ আসনে প্রার্থী ৫ জন। তারা হলেন- আ’লীগ মনোনীত এস এম কামাল হোসেন, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্বতন্ত্র কাইজার আহমেদ ও ফাতেমা জামান সাথী। এস এম কামাল ছাড়া অন্য প্রার্থীদের এলাকায় পরিচিতি নেই। খুলনা-৪ আসনে প্রার্থী সর্বাধিক ১৪ জন। তারা হলেন- আ. লীগের আব্দুস সালাম মুর্শেদী, জাকের পার্টির শেখ আনসার আলী, বিএনএম’র এস এম আজমল হোসেন, জাতীয় পার্টির মো. ফরহাদ আহমেদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনিরা সুলতানা, ইসলামী ঐক্যজোটের রিয়াজ উদ্দিন খান, স্বতন্ত্র মো. জুয়েল রানা, এম ডি এহসানুল হক, মো. রেজভী আলম, এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা, আতিকুর রহমান, এইচ এম রওশান জামির। এর মধ্যে মোর্ত্তজা রশিদী দারা প্রয়াত হুইপ মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই ও ক্রীড়া সংগঠক। তবে এ আসনে সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসার মতো প্রার্থী নেই।
খুলনা-৫ আসনে প্রার্থী ৭ জন। তারা হলেন- আ’ লীগের নারায়ন চন্দ্র চন্দ, জাতীয় পার্টির মো. শাহীদ আলম, জাকের পার্টির সামাদ শেখ, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ সেলিম আকতার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের এস এম এ জলিল, ইসলামী ঐক্যজোটের তরিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র শেখ আকরাম হোসেন।
আকরাম হোসেন উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ফুলতলা উপজেলা আ. লীগের বর্তমান সভাপতি এবং ৪ বার উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তারপরও নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে নির্বাচনে খুব বেশি সুবিধা করতে পারবেন না বলে মনে করছেন ওই এলাকার ভোটাররা।
খুলনা-৬ আসনে প্রার্থী ১২ জন। তারা হলেন- আ. লীগের মো. রশীদুজ্জামান, এনপিপির মো. আবু সুফিয়ান, জাকের পার্টির শেখ মর্তুজা আল মামুন, জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মির্জা গোলাম আজম, বিএনএম’র এস এম নেওয়াজ মোরশেদ, তৃণমূল বিএনপির গাজী নাদির উদ্দিন খান, স্বতন্ত্র এস এম রাজু, গাজী মোস্তফা কামাল, জি এম মাহবুবুল আলম, মো. মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর ও মো. অহিদুজ্জামান মোড়ল। এ আসনে রশীদুজ্জামান, শফিকুল ইসলাম মধু ও মাহবুবুল আলম ছাড়া অন্য প্রার্থীদের তেমন পরিচিতি নেই। আ. লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীই রশীদুজ্জামানের পক্ষে থাকায় তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।
খুলনা গেজেট/হিমালয়