নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে খুলনার একটি আদালত চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন। একইসাথে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত দু’আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকী দু’জন পলাতক রয়েছেন। বুধবার খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ এর বিচারক আ: ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো: রুবেল খান। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, শিউলী বেগম, হাসিনা (পলাতক), আ: রব ওরফে রাহুল(পলাতক) ও আমিন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম তার বাবাকে নিয়ে গবরচাকা এলাকার হাবির বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। অভাবের সংসার হওয়ায় স্থানীয় একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন ভিকটিম। আর এ সুযোগ কাজে লগিয়ে মামলার এজাহার নামীয় আসামি লাবনী ২০১১ সালের ২১ নভেম্বর তাকে গার্মেন্টেসে কাজ দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।
এর কিছুদিন পর আসামি শিউলী ও লাবনী বাড়ি ফিরে আসে। ভিকটিমের বাবাকে তারা জানায়, তার মেয়ে ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে চকুরী করছে। অনেক টাকা বেতন পায়। অল্প সময়ের মধ্যে বাড়ি ফিরে আসবে। এ কথা বলে ভিকটিমের বাবার হাতে ১ হাজার টাকা ধরিয়ে দেয়।
মেয়ে ফিরে না আসায় বাবা আসামিদের জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু তাদের কথায় সন্দেহ বাড়ে বাবার। পরবর্তীতে কয়েকজনকে নিয়ে আসামিদের বাড়িতে গেলে তারা স্বীকার করে যে তাকে চাকরী দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় না নিয়ে ভারতে বিক্রি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন, যার নং ১০।
আদালত সূত্রে আরও জানা গেছে, ঘটনার দিন আসামি শিউলী বেগম ভিকটিমকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে আসামি আমিনের সহায়তায় বোম্বে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার ওই দু’ আসামি হাসিনার হেফাজতে রাখেন। পরবর্তীতে একটি বাসা ভাড়া করে শিউলী ও ভিকটিম একই স্থানে অবস্থান করে। পরে ওই তিনজন আসামি যোগসাজেশে তাকে আ: রব ওরফে রাহুলের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে হাসিনা ভারত থেকে দেশে ফিরে আসে। সেখানে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক দেহ ব্যবসায়ে নিয়োজিত করে। পরে পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে ভারতের বোম্বে থেকে উদ্ধার করা হয়।
খুলনা গেজেট/এইচআরডি