সারাদেশে ধর্ষণ, নির্যাতন হত্যার প্রতিবাদে খুলনায় গণস্বাক্ষর ও ধর্ষকদের বিরুদ্ধে শপথ বাক্য উচ্চারিত হয়েছে। বুধবার (৭ অক্টোবর) বেলা ১১টায় নগরীর শিববাড়ী মোড়ে জনউদ্যোগ,খুলনা ও গুণীজন স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ধর্ষণের শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদন্ড প্রয়োজনে ক্রসফায়ারের দাবি উঠেছে মহান জাতীয় সংসদে। উত্থাপন করেছে এক সাংসদ। এ থেকে প্রমাণ হয় যে নারী ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারলে এ রোধ করা সম্ভব। ধর্ষণ আর মাদক এক অপরের পরিপূরক। তাই দুটিকেই এক সাথে রোধ করতে হবে। নারী নির্যাতন করে হত্যা, ধর্ষণ মামলাগুলোর জন্য দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ‘ধর্ষণের কারণে নারী সমাজ আতঙ্কিত ও চিন্তিত। গণমাধ্যমে খবর এসেছে ২০১৯ সাল যেন ধর্ষণের মহাসাগর।
পুলিশের অপরাধ সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গেলো বছর ১৭ হাজার ৯৯৯টি নারী নির্যাতন মামলা হয়েছে। তার মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫ হাজার ৪শ জন। ১৮৫ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষণের সময় ২৬ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে। ১৮৩১ জন নারীর মৃত্যু ধর্ষণের পরে। ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা গেছে ১৪ জন শিশু। গেলো বছর সবচেয়ে বেশি নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণ হচ্ছে, ধর্ষণের সংখ্যা বাড়ছে, এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী, এ বিষয়গুলো নিয়ে সর্বদলীয় মতামতের ভিত্তিতে সমাধানের পথ খুজতে হবে। এভাবে বললেন গণস্বাক্ষর ও শপথ চলাকালে নাগরিক নেতারা।
বক্তারা আরো বলেন, সরকারের কাছে আবেদন যে হারে ধর্ষণ বেড়েছে, তাতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে ধর্ষণ নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। সময় এসেছে এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনার। সরকারের কাছে অনুরোধ ধর্ষণের দায়ে (যদি প্রমাণ হয়) তার সাজা যাবজ্জীন কারাদন্ড না দিয়ে মৃত্যুদন্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, ধর্ষণের খবরের মতো ধর্ষণের শাস্তির খবরও ফলাও করে প্রচার করার জন্য। যাতে ধর্ষকরা এ সর্ম্পকে জানতে পারে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএমএ’র সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম। সঞ্চালনা করেন জনউদ্যোগ, খুলনার আহবায়ক নারী নেত্রী এ্যাডঃ শামীমা সুলতানা শীলুও জনউদ্যোগ, খুলনার সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্র নাথ সেন । অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের বয়রা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দা লুৎফুরন্নাহার, রেহেনা আক্তার, রোজী রহমান, সিপিবি নারী সেলের সুতপা বেদজ্ঞ, সাংস্কৃতিক কর্মি জেসমিন জামান, মহিলা পরিষদের ইসরাত আরা হীরা, আগুয়ান ৭১এর মো: আব্দুল্লাহ চৌধুরী, আবিদ শান্ত, কমলেশ বাছাড়,রুমি রহমান,সুকন্যা সরদার,কাওছারী জাহান, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, জেলা ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার রায়, অধ্যক্ষ ডা: এম এন আলম সিদ্দিকী, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, গ্লোবাল, খুলনার শাহ মামুনর রহমান তুহিন, কৃষ্ণা দাস, সঞ্জয় কুমার মল্লিক, শেখ আব্দুল হালিম, মোহাঃ এম এ সাদী, প্রমুখ।
খুলনা গেজেট / এমএম