খুলনা থেকে বিভিন্ন রুটের ট্রেনের সিডিউল ভেঙ্গে পড়েছে। কোনো ট্রেনেই সময়মতো খুলনায় পৌঁছাচ্ছে না। খুলনা থেকেও গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে এক থেকে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। অবরোধে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়ার কারণেই সিডিউল বিপর্যয় হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে খুলনা রেল লাইনের নিরাপত্তায় ৮ জন আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছেন খুলনার স্টেশন মাস্টার।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে জানা গেছে, খুলনা থেকে ঢাকা, রাজশাহী ও চিলাহাটি রুটে প্রতিদিন ৭টি আন্তঃনগর এবং খুলনা-বেনাপোল রুটে দুটি মেইল ট্রেন চলাচল করে। গত দুই দিন ধরে প্রায় সব ট্রেনই দেরিতে খুলনা স্টেশনে পৌঁছাচ্ছে। রাতে যে সব ট্রেন খুলনায় আসছে সকালে সেগুলো নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। অন্য ট্রেনগুলো ছাড়ছে দেরিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস সোমবার সকালে খুলনা থেকে ছাড়ার কথা ছিলো ৭টা ১৫ মিনিটে। প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা দেরি করে ট্রেনটি ১১টা ৩৫ মিনিটে খুলনা স্টেশন ত্যাগ করেছে। চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেস খুলনায় পৌঁছানোর কথা ছিলো সোমবার ভোর ৪টা ২০ মিনিটে। প্রায় ৪ ঘণ্টা দেরি করে ট্রেনটি খুলনায় পৌঁছেছে ৮টা ৩০ মিনিটে।
বেনাপোল থেকে উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা বেতনা এক্সপ্রেস-২ খুলনায় পৌঁছানোর কথা ছিলো বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে। ট্রেনটি খুলনায় এসেছে দুপুর ১টায়। রাজশাহী থেকে আসা কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস রোববার রাতে খুলনায় পৌঁছানোর কথা ছিলো ৮টা ২৫ মিনিটে। প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে খুলনায় এসেছে ট্রেনটি।
সোমবার সকালে রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যাগ-লাগেজ নিয়ে ছাত্রীরা প্লাটফর্মে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছেন। সবার চোখে-মুখে ক্লান্তি। নগরীর টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা সোবহান হোসেন বলেন, ভোর সাড়ে ৬টা বাসা থেকে বের হয়েছি। ৭টা ১৫ মিনিটে ট্রেন ছাড়ার কথা, সাড়ে ১০টায়ও ট্রেনের খবর নেই। স্টেশনের লোকজনকে বলছি কতো দেরি হবে জানালে বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে আসি। তারা প্রতিবারই বলছে, একটু পরেই ছাড়বে। এভাবে সাড়ে ৪ ঘণ্টা চলে গেছে।
স্টেশনে অন্যান্য যাত্রীরাও সময়সূচি নিয়ে স্টেশন মাস্টারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লুকোচুরির অভিযোগ করেন। নগরীর গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা আরাফাত রহমান বলেন, সাড়ে ৪ ঘণ্টা দেরি হবে জানালে আমরা বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে নির্ধারিত সময়ে আবার আসতে পারতাম। এখন শীতের মধ্যে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে সীমাহীন দুর্ভোগ হচ্ছে।
এ ব্যাপারে খুলনার স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা বলেন, সব ট্রেনই সময়মতো আসছে এবং যাচ্ছে। রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেসের প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় ব্যবধানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, এসব তথ্য নিয়ে কী করবেন ? এসব তথ্য দেওয়ার নিয়ম নেই।