বোতলজাত সয়াবিন তেল নিতে হলে কোম্পানীর প্রতিনিধিরা বিভিন্ন ধরণের পণ্য ধরিয়ে দেয়। যা বিক্রি করতে গেলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ওই সকল পণ্য না নিলে তেল দিতে চায়না তারা। তাই বাধ্য হয়ে পণ্য নিতে হয়। বাজারে খোলা তেলের কোন সংকট নেই। সংকট আছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। একের পর এক অভিযান চালিয়ে তেলের ব্যাপারে কোন সমাধান হচ্ছেনা। অভিযান চালানোর পর আবারও বেড়ে যায় সবাবিন তেলের দাম। সোমবার নগরীর রূপসা বাজারের সাব্বির স্টোরের মালিক মো: নান্টু হোসেন ক্ষোভের সাথে কথাগুলো বলেন।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত দরে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা, এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা ও পাঁচ লিটারের বোতল ৯৮৫ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। খোলা তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও সংকট রয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। তবে তেলের দাম প্রতি লিটারে আরও ২০ টাকা বাড়ালে এ সংকটের সমাধান হতে পারে বলে কোম্পানীর প্রতিনিধিরা খুচরা ব্যবসায়ীদের জানিয়েছেন।
রূপসা বাজারের খুচরা দোকানী সাব্বির বলেন, ৫ মে তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে সরকার প্রজ্ঞাপণ জারি করে। এর মধ্যে আবার প্রতিনিধিরা এসে দাম বৃদ্ধির আগাম শুনান দিচ্ছে। তারা আমাদের বিভিন্ন পণ্য ধরিয়ে তেল দিতে চায়। না নিলে তেল দেয়না। এক ও দু’ লিটারের দু’কার্টন তেল নিয়েছেন তিনি, কিন্তু তার সাথে চিনিগুড়া চাল, সরিষার তেল ও ফিন্নি মিক্স ধরিয়ে দেয়। যা বিক্রি করা তার পক্ষে খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এক লিটার তেল বেচলে তার দু’ টাকা লাভ হয়। তারপর এ সকল পণ্য দেওয়াতে ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। তেলের কোন সংকট নেই। আবারও দাম বাড়ানোর পায়তারা করছে পাইকারী ব্যবসায়ীরা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মতো ছোট দোকানে অভিযান চালিয়ে কোন লাভ নেই। বড় বড় প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে মূল রহস্য বের করার অনুরোধ করেন তিনি।
নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী মাহফুজ বলেন, এখনও বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। তেল নিতে গেলে তালবাহানা করে প্রতিনিধিরা। কোম্পানীর প্রতিনিধিরা আবারও তেলের দাম বৃদ্ধির আগাম শুনান দিচ্ছে। তার বলছেন বডি রেট থেকে আরও ২০ টাকা বাড়ানো হলে স্বাভাবিক হতে পারে তেলের সরবরাহ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউ মার্কেটের অপর ব্যবসায়ী বলেন, এখনও খুলনার অনেক ব্যবসায়ীর ঘরে পুরাতন রেটের মাল রয়েছে। তারা নতুন রেটের মাল দোকানের সামনে ঝুলিয়ে পুরানো রেটের মাল বিক্রি করছে। তবে নতুর দামের বোতল বাজারে এসেছে যা প্রয়োজনের তুলনায় কম দিচ্ছে।
খুলনায় রূপচাদা কোম্পানী পরিবেশকের এক কর্মকর্তা অকপটে সংকটের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তেলের দাম আরও ২০ টাকা বাড়বে বলে শুনেছেন। বর্তমানে তেল নিতে গেলে কোম্পানী বিভিন্ন ধরণের পণ্য ধরিয়ে দিচ্ছে। সেগুলো না নিলে তাদেরও তেল দেওয়া হচ্ছেনা। ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম তেল আমদানি হলে সয়াবিন তেলের দাম ও সংকটের ক্ষেত্রে কিছুটা প্রভাব পড়বে। না হলে বাজার এর থেকে আরও বেড়ে যাবে বলে তার ধারণা।