খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
  শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২
৮ বছর ধরে পড়ে আছে ১৫ কোটি টাকার রেডিওথেরাপি মেশিন

খুলনায় এক’শ শয্যার ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুমেক হাসপাতালের বর্হিবিভাগে পরামর্শ ছাড়া খুলনায় সরকারিভাবে ক্যান্সার চিকিৎসা বলতে কিছু নেই। রোগীদের সম্পূর্ণ নিজ খরচে সপ্তাহে দু’দিন কেমোথেরাপি দেয়ার ব্যবস্থা থাকলেও করোনার কারণে তা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থার মধ্যে খুলনায় ২’শ কোটি টাকা ব্যয়ে ১’শ শয্যার ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ আশা জাগিয়েছে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সারাদেশের ন্যায় খুলনায়ও ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের। চিকিৎসা খরচ ব্যয়বহুল হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারগুলোকে। খুলনায় সরকারি কোন ক্যান্সার হাসপাতালও নেই। খুমেক হাসপাতালে ক্যান্সার ইউনিটে কোন ইনডোর ওয়ার্ড নেই। বর্হিবিভাগে মাত্র দু’জন চিকিৎসক থাকলেও একজন বেশিরভাগ সময় খুলনার বাইরে থাকেন। ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা ও খরচ কমাতে সরকার ৮টি বিভাগে ৮টি ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে খুলনায় ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ’ শয্যাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ হবে।

গত ১৮ অক্টোবর সরকার ১ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮টি বিভাগে একটি করে ১শ’ শয্যাবিশিষ্ট ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।এটা বাস্তবায়নের জন্য খুলনার স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। তবে খুলনায় স্বাস্থ্য খাতে বাস্তবায়নাধীন একাধিক মেগা প্রকল্পের সাথে এটিও দ্রুত বাস্তবায়ন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খুমেক হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ক্যান্সার ইউনিট থেকে পাওয়া তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং প্রায় ৯১ হাজার বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে মারা যাচ্ছে। ক্যান্সার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবক্যান এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ১৩ থেকে ১৫ লাখ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা অঞ্চলের মানুষের ক্যান্সার চিকিৎসায় উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষে ২০১২ সালের জুলাই মাসে লিনিয়র এক্সেলেটর বা রেডিওথেরাপি মেশিনটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। মেশিনটি রাখা হয় ক্যান্সার বিভাগের ভবনের সামনে। তখন থেকে আজ অবধি সেখানেই পড়ে আছে মেশিনটি।

সূত্র জানায়, মেশিনটি প্রতিস্থাপন এবং আনুসঙ্গত অবকাঠামো নির্মাণে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে সাড়ে ৭ কোটি টাকা চাওয়া হয়। যার মধ্যে ৫ কোটি টাকা মেশিনের অন্যান্য অংশ ও ২ কোটি টাকা অবকাঠামো নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের চিঠি চালাচালিতে এখন পর্যন্ত পড়ে আছে ১৫ কোটি টাকার মেশিনটি।

রেডিও থেরাপী ও অনকোলজি বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মুকিতুল হুদা বলেন, হাসপাতালের এই বিভাগে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সার্জারি, কেমোসহ অন্যান্য চিকিৎসা হলেও নেই কোন প্রকার রেডিও থেরাপীর ব্যবস্থা। এখানে বেশ কয়েক বছর আগে লিনিয়ার এক্সেলেটর মেশিন আসলেও তা স্থাপন করা হয়নি এখনও। এ মেশিনটির হাই রেডিয়েশন প্রটেকশনের জন্য বাঙ্কার তৈরি করা প্রয়োজন। তাছাড়া এই মেশিন স্থাপন করা সম্ভব না। এ বিষয়ে নিজেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার গেলেও কোন ফল পাননি বলে তিনি জানান। খুলনায় আলাদা করে ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণ হবে শুনেছি, যদিও এটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ১শ’ শয্যার আলাদা ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণ করা হলে এতে খুলনাবাসীর ক্যান্সার চিকিৎসার সুযোগ বাড়বে।

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!