হযরত ইমাম হোসাইন (আ.)’র পবিত্র চেহলাম উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং শোক ও মাতম মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) নগরীর আলতাপোল লেনস্থ আঞ্জুমান- এ পঞ্জাতানী ইমামের বাড়িতে খুলনা বিভাগীয় কর্মসূচী পালন করা হয়।
ইমাম বাড়িতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলিল রাজাভী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, শহীদ সম্রাট ইমাম হুসাইন (আ) বিশ্ব ইতিহাসে এমন এক অবিস্বরণীয় ব্যক্তি যাকে এক নামে সারা বিশ্ব চেনে, যিনি ৬১ হিজরিতে কারবালার মরুভূমিতে নির্মমভাবে শাহাদাতবরণ করেছিলেন ও তাঁর পরিবারকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ইমাম হাসান (আ) ইমাম হোসাইনকে (আ) বলেছেন: ‘হে হোসাইন, তোমার শাহাদাতের দিনের মতো কোন শোকাবহ দিন নেই।’ আর এ জন্যই ইমাম হুসাইনের রক্ত-রঞ্জিত শাহাদতের চৌম্বকীয় আকর্ষণে তাঁর পবিত্র রক্তের শোকে মানবজাতির কয়েক সাগর বা মহাসাগর পরিমাণ শোকের অশ্রু কিয়ামত পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে ইসলামকে চির-উন্নত রাখার প্রেরণা যুগিয়ে যাবে।
নবী (সা) দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (আ)’র পবিত্র শাহাদাতকে স্মরণ করা একটি ধর্মীয় দায়িত্ব। কেননা ইমাম হোসাইন (আ) ইসলাম ধর্ম রক্ষার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। সুতরাং ইমাম হোসাইন (আ)’র এই কালজ্বয়ী বিপ্লবকে স্মরণ করে আলোচনা অনুষ্ঠান ও শোক মিছিলের আয়োজন করে জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বলে তিনি মনে করেন।
কারবালায় ইমাম হোসাইন (আ) এবং তার সঙ্গী-সাথীদের শাহাদাতের পর ইমামের খান্দানের মধ্য থেকে যাঁরা বেঁচে ছিলেন তাদেরকে বন্দী করা হয়েছিল। এদের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বে ছিলেন ইমাম হোসাইনের মহীয়সী বোন হযরত যয়নাব সালামুল্লাহি আলাইহা।
ইমাম হুসাইনের (আ) জন্য শোক প্রকাশ প্রসঙ্গে বিশ্বনবী (সা) বলেছেন, নিশ্চয়ই প্রত্যেক মু’মিনের হৃদয়ে হুসাইনের শাহাদতের ব্যাপারে এমন ভালবাসা আছে যে তার উত্তাপ কখনো প্রশমিত হবে না।
তিনি আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সমস্ত চোখ কিয়ামতের দিন কাঁদতে থাকবে, কেবল সেই চোখ ছাড়া যা হুসাইনের বিয়োগান্ত ঘটনায় কাঁদবে, ঐ চোখ সেদিন হাসতে থাকবে এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ ও বিপুল নেয়ামত দান করা হবে।’
ইসলামের শত্রুরা মহানবীর (সা) পবিত্র আহলে বাইতকে ও তাঁদের পবিত্র নামকে ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল চিরতরে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে এর উল্টো। কারণ, মহান আল্লাহ নিজেই তাঁর ধর্মের নুরকে রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন এবং এই আলোকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা কাফির-মুশরিকদের কাছে যতই অপছন্দনীয় হোক না কেন। বর্তমান যুগে কোটি কোটি শোকার্ত মানুষ ইমাম হুসাইনের (আ) চেহলাম-বার্ষিকী পালন করছেন।
এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ আলী রেজা জায়দী, হুজ্জাতুল ইসলাম মোঃ আলী মোর্তজা, হুজ্জাতুল ইসলাম আব্দুল কাইয়ুম, হুজ্জাতুল ইসলাম মোঃ আব্দুল লতিফ, হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ সাবের রেজা, হুজ্জাতুল ইসলাম মোঃ আনিছুর রহমান, হুজ্জাতুল ইসলাম মোঃ মোস্তাক আলী, হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ফিরোজ আলী আবেদী, হুজ্জাতুল ইসলাম সাজেদুল ইসলাম, হুজ্জাতুল ইসলাম মোঃ ইয়ানুর হোসেন ও হুজ্জাতুল ইসলাম শেখ আলী আকবর প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এসজেড