দু’দিন বাদে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর। এটাকে কেন্দ্র করে চলছে কেনাকাটার ধুম। গামেন্টর্স পণ্য কেনার পর মানুষের সমাগম বাড়ছে টুপি ও আতরের দোকানগুলোতে। করোনা সংকটের কারণে গেল দু’বছরের ঈদে তেমন একটা ব্যবসা করতে পারেনি। তবে এবার ঈদে ক্রেতাদের কেনাকাটার আগ্রহ দেখে ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাড়ানোর সম্ভাবনা দেখছেন।
নগরীর ডাকবাংলা মোড় ও ডাকবাংলা সুপার মার্কেটের আশপাশে গড়ে উঠেছে ভাসমান টুপি ও আতরের দোকান। ঈদ উপলক্ষে এসব দোকানে শোভা পাচ্ছে হরেক রকমের সুগন্ধী আতর ও বিভিন্ন ডিজাইনের টুপি। এসকল পণ্য সাধারণ ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। ভারত, মালয়েশিয়া, তুর্কি, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও ফ্রান্স থেকে এগুলো আমদানি করা হয়েছে। বিদেশীর পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত এ পণ্য সাধারণ ক্রেতাদের নজর কাড়ছে।
বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আমির আল উদ, এক্স চকলেট, ফ্রান্সের ইন্টারলাভ, দুবাইয়ের আল রেহাব, সাবাইয়া, ক্লাসিক, সুলতান, আল ফারেজ ও লর্ড নামের আতর খুলনার মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। তবে এগুলোর মধ্যে পুরুষরা সবচেয়ে বেশী আগ্রহ দেখায় আমির আল উদ আতরে। এটার ফ্লেবার খুব মিষ্টি, উগ্র নয়। এজন্য খুলনার অধিকাংশ পুরুষ এটা কিনছেন। অপরদিকে, খুলনার নারীরা বেশী আগ্রহ দেখায় ক্লাসিক ও সাবাইয়া নামের আতরে। এটার ডিউরেশন বেশীক্ষণ থাকে বলে মহিলারা বেশী নেয়। তাছাড়া পাকিস্তানী, চায়না, তুর্কীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানীর টুপি রয়েছে। ঈদ ঊপলক্ষে এর কদরও বেড়েছে।
ডাকবাংলা মোড়ের আতর বিক্রেতা হুমায়ূন কাবির মামুন বলেন, গেল দু’বছর করোনার কারণে তেমন একটা বিক্রি হয়নি। তবে এবার ক্রেতাদের মধ্যে কেনাকাটার যে সাড়া দেখছি তাতে মনে হয় করোনাকালীন সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। তার দোকানে বিভিন্ন নামে ভিন্ন কোম্পানীর প্রায় ১০০ পদের আতর রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ছেলেরা আমির আল উদ কিনতে বেশী আগ্রহ দেখাচ্ছে। সারাদিন বেচাকেনা বেশ ভাল তবে ইফতারের পর কিছুটা কমে যায়। তারাবির পরে আবার ক্রেতাদের আগমণ হয়। তখন বিক্রির পরিমাণ বেশী থাকে।
ডাকবাংলা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী ইমরান বলেন, ওয়াইট উদ ও সুইট উদ নামে দু’টি আতর ফ্রান্স থেকে আমদানি করা হয়েছে। এর ৩ মিলি ২০০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এ দু’টোতে আগ্রহ বেশী পুরুষের। এছাড়াও রয়েছে রয়েল ম্যারিজ, ওয়াইল্ড স্টোন ও ফগ নামের আতর।
বাগেরহাট থেকে আতর কিনতে খুলনায় এসেছিলেন মো: আশরাফুল। তিনি বলেন, সেখানে আতর পাওয়া যায়। কিন্ত আমির আল উদ পাওয়া যায়না। এর বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নামাজের জন্য শরীরের পবিত্রতার একটি বিষয় রয়েছে। আতর মেখে মসজিদে গেলে নিজেকে পবিত্র বলে মনে হয়। তাই এটা কিনতে এত দূরে আসা।
সোনাডাঙ্গা চিলড্রেনস ভয়েস স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আইয়াতের নতুন পোশাক ও জুতা কেনা হয়েছে। বাকি রয়েছে টুপি। এটা কিনে না দিলে সে ঈদের নামাজ পড়তে মসজিদে যাবে না। তাই দুপুরে মাকে সাথে নিয়ে ডাকবাংলা মোড়ে টুপি কিনতে আসা তার।