কোরবানি ঈদে খুলনার চামড়ার বাজার দখল করে নিয়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তাদের কারণে বেশীর ভাগ চামড়া কিনতে পারেনি প্রকৃত ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশী দরে ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন। এছাড়া ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় চামড়া কিনতে পারেনি বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। আর এ সুযোগ গ্রহণ করেছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, নগরীর শেখপাড়া একসময়ে চামড়া পট্রি বলে পরিচিত ছিল। কালের বিবর্তন ও অর্থ সংকটে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। যারা আছেন তারা অর্থ সংকটের কারণে চামড়া কিনতে পারেনি।
চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অব্দুস সালাম ঢালী বলেন, অর্থ সংকটের কারণে তারা এবারও চামড়া কিনতে পারেননি। গত কয়েকদিন আগে সরকার চামড়ার প্রতি বর্গফুট ৪৪ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। সে দরে চামড়া ক্রয় করতে শুরু করেন। এরমধ্যে রোববার দুপুরে কয়েকটি গাড়ি এসে সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশী দরে চামড়া কিনে নিয়ে যায়। আমাদের দেখা ছাড়া কোন কিছু বলার উপায় নেই।
ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ বাবর আলী বলেন, কালের বিবর্তনে শেখপাড়া থেকে চামড়া ব্যবসা উঠে গেছে। অস্থায়ীভাবে আমরা কয়েকজন ব্যবসায়ী এ ব্যবসা করছি। ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে ব্যবসায়ীদের অনেক টাকা আটকে আছে। রোববার খুলনার ৭ জন ব্যবসায়ী রাস্তায় দাড়িয়ে চামড়া ক্রয়ের জন্য অস্থায়ীভাবে দোকান করে সেখানে ব্যবসা করছিল। হঠাৎ কয়েকটি নামী দামি কোম্পানীর প্রতিনিধিরা এসে বেশী দামে চামড়া কিনে নিয়ে যান।
চমড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ঘোষ বলেন, এ ব্যবসা এখন প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে নেই। চলে গেছে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের হাতে। ট্যানারি মালিকরা সরাসরি তাদের কাছ থেকে চামড়া ক্রয় করত। এখন পুঁজি সংকটের কারণে বিক্রেতাদের নগদ টাকা দিতে পারেননা। তাছাড়া কোরবানির মৌসুম এলে ঢাকার বিভিন্ন কোম্পানী মাদ্রাসার সাথে সরাসারি যোগাযোগ করে সেখান থেকে চামড়া কিনে নিচ্ছেন। সেখান থেকে তারা ৮০০ টাকা দরে কিনে নিচ্ছেন। ফলে বিক্রেতারা আমাদের কাছে সরাসরি আসছেন না।
তিনি চামড়া ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার জন্য কয়েকটি দাবি করেছেন। সেগুলো হলো, ব্যবসার জন্য ব্যবসায়ীদের একটি নির্ধারিত স্থান দেওয়া। ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে খুলনার ব্যবসায়ীরা প্রায় ৩ কোটি টাকা পাবে, সে টাকা উদ্ধারে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা। সর্বশেষ মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা ঠেকানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এগুলো না করলে অচিরে খুলনা থেকে চামড়া ব্যবসা হারিয়ে যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই