খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের সম্পদ সংরক্ষণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে আঞ্চলিক টাস্কফোর্স, ইনভেন্টরী ও নিরাপত্তা কমিটি। বাংলাদেশ জুট মিলস্ কর্পোরেশন (বিজেএমসি) এর নিয়ন্ত্রণাধীন বন্ধ ঘোষিত ২৫টি পাটকলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি (জায়গা-জমি, গাছপালা ইত্যাদি) যন্ত্রপাতি, ভান্ডার সামগ্রী, তৈরি পণ্য ও কাঁচামালের নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধায়ন ও যথাযথ সংরক্ষণের জন্য খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম এই তিনটি জোনের আঞ্চলিক টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করে।
গেল ৫ জুলাই বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের একটি পত্র ও কমিটির সদস্যদের সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এছাড়া প্রতি মিলের প্রকল্প প্রধানদের আহ্বায়ক করে গঠন করা হয়েছে আরো দু’টি কমিটি। এই দু’টি কমিটি হচ্ছে ইনভেন্টরী কমিটি এবং নিরাপত্তা কমিটি।
খুলনার সরকারি ৯টি পাটকল রয়েছে। তা হচ্ছে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের প্লাটিনাম, ক্রিসেন্ট, খালিশপুর, দৌলতপুর, দিঘলিয়া উপজেলার স্টার, আটরা শিল্পাঞ্চলের ইস্টার্ণ ও আলীম এবং যশোরের কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিল।
চিঠিতে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির কর্মপরিধি হিসেবে উল্লেখ করা হয়-
- মিল সমূহের ইনভেন্টরী কমিটি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান,
- ইনভেন্টরী কমিটির কার্যক্রম সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান ও পর্যবেক্ষণ,
- মিল ভিত্তিক ইনভেন্টরীকৃত স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি (গাছপালা, ভবন, জায়গা-জমি ইত্যাদি), যন্ত্রপাতি, তৈরি পণ্য ও কাঁচামাল ইত্যাদি তালিকা অনুযায়ী কমিটির নিকট হতে বুঝে নেয়া এবং এ সকল মালামাল যথাযথভাবে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা,
- সংশ্লিষ্ট মিলে রক্ষিত কাঁচা পাটের তালিকা (যদি থাকে) গ্রহণ ও তা বিক্রয়ের জন্য মূল্য নির্ধারণ,
- সংশ্লিষ্ট মিলের মেশিনারীজসমূহ ব্যবহার উপযোগী রাখার বিষয়ে মিল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান এবং সে অনুযায়ী মিল কর্তৃপক্ষের গ্রহীত ব্যবস্থা তদারকি,
- বিক্রয়াদেশের বিপরীতে পণ্যের শিপমেন্ট তদারকি,
- মিলভিত্তিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত যৌথ নিরাপত্তা কমিটির কার্যক্রম মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান,
- টাস্কফোর্স প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট যে কোন কর্মকর্তাকে কো-অপ করতে পারবে।
বিজেএমসির পরিচালক (বিপনন) ড. মোঃ ওয়াহেদুজ্জামানকে আহ্বায়ক ও বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী (চলতি দায়িত্ব্) মোঃ গোলাম রব্বানীকে সদস্য সচিব করে খুলনা আঞ্চলিক টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া এই কমিটির সদস্যা হলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোঃ আলমগীর হোসেন, শ্রম অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান, খুলনা ও যশোর জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলের প্রকল্প প্রধান। এছাড়া রয়েছে কেএমপি ও ২ জেলার পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি।
এমনটি জানিয়েছেন শ্রম অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি জানান, রবিবার খুলনা আঞ্চলিক টাস্কফোর্স কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কমিটির আহ্বায়ক বিজেএমসির পরিচালক (বিপনন) ড. মোঃ ওয়াহেদুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্লাটিনাম জুট মিলের বোর্ডসভায় কমিটির খুলনা অঞ্চলের ১৪ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, সভায় বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস অফিসের প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে কো-অপ করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রতিনিধিকে কো-অপ করার বিষয়েও আলোচনা করা হয়। সভায় মেশিনারীজ যাতে নষ্ট না হয়, তাই রক্ষাণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। একই সাথে শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনার সঠিক হিসাব হয় সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে এসব কমিটির প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তবে ঈদ ও শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনার বিষয়ে ব্যাপক কাজ থাকায় আরো কয়েকদিন প্রয়োজন হতে পারে। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।
বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী (চলতি দায়িত্ব্) ও প্লাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মোঃ গোলাম রব্বানী জানান, গত ৫ জুলাই টাস্কফোর্স, ইনভেন্টরী ও নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা হয়। টাস্কফোর্স কমিটি বাকী দু’টি কমিটির কার্যক্রম তদারকি করবে।