খুলনা নগরীতে বিক্ষুব্ধ জনতার আড়ালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাটে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বিষয়ে এখনও কোনো মামলা হয়নি। থানায় আটক হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ না করায় তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। আতঙ্কে নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাটার শো-রুমগুলো বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, দুপুর দেড়টার দিকে নগরীর ব্যস্ততম সড়ক খুলনা শিববাড়ি মোড়। পাশে রয়েছে হোটেল টাইগার গার্ডেন। ওই বিল্ডিংয়ের নিচে রয়েছে বিখ্যাত বাটা কোম্পানী। যেটি একটি হলুদ রংয়ের ত্রিফল দিয়ে ঢাকা রয়েছে। সোমবার ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ থেকে হামলা চালানো হয় ওই প্রতিষ্ঠানে।
শিববাড়ি মোড় বাটা শোরুমের ব্যবস্থাপক তাহিদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, বিকেল থেকে শিববাড়ি মোড়ে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ চলছিল। সন্ধ্যা ৬ টা ৫৫ মিনিটের দিকে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা এ প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। হামলার সময়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ১ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যের জুতা এবং স্যান্ডেল লুটপাট ও ক্ষতিগ্রস্থ করে। যাওয়ার সময়ে ক্যাশ থেকে নগদ ৮৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় তারা।
তিনি আরও বলেন, শোরুমের ডেকোরেশন বিক্ষুব্ধ জনতা ভাংচুর করে। তবে ক্ষতির পরিমাণ কত তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ঢাকা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত পরবর্তী কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না।
এদিকে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, টাইগার গার্ডেন, দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা এবং নিউমার্কেটের পেছনের বাটার শোরুমগুলো বন্ধ রয়েছে।
ডাকবাংলো মোড়ে বাটা শোরুমের কর্মচারী অরবিন্দু এ প্রতিবেদককে বলেন, সোমবার খুলনার শিববাড়ি এবং ঢাকার কয়েকটি শোরুমে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই হামলার পর থেকে খুলনাসহ ঢাকার কয়েকটি শোরুম বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত শোরুমগুলো বন্ধ থাকবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে আরও জানান।
নগরীর ডাল মিল মোড়ে অবস্থিত কে এফ সি এবং ডমিনোজ পিৎজা হাউস। সেখানে গিয়ে দেখা যায় শুনশান নিরবতা। ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীরা বেঞ্চে এবং সিড়ির ওপর বসে অলস সময় পার করছেন। ওখানে কথা হয় ডমিনোজ পিৎজা’র কর্মচারী অনীকের সাথে। তিনি হামলা বা ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এ প্রতিবেদকের কাছে জানাতে রাজি হননি।
পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হয় সোনাডাঙ্গা মডেল থানায়। সেখানকার এস আই আব্দুল হাই এ প্রতিবেদককে বলেন, ডমিনোজ পিৎজা কোম্পানীর ব্যবস্থাপক আল আমিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
পরে আল আমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কোম্পানীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছেন।
ডমিনোজ পিৎজা কোম্পানীর ওপরে রয়েছে কে এফ সি। সেখানে উপস্থিত কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খুলনায় ৩ টি প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। হামলার ঘটনায় রাতভর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩১ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় এখনও পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। তাই তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এইচ/এনএম