খুলনায় আড়ংঘাটা থানার সরদারডাঙ্গা শহিদ হাতেম আহম্মেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র হাসমিকে হত্যার দায়ে মা সোনিয়া আক্তারসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। তবে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমান নামে অপর আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) আসামিদের আপিল ও মামলার ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) শুনানি শেষে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
যে তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রয়েছে তারা হলেন, শিশুটির মা সোনিয়া আক্তার, মো. নুরুন্নবী ও মো. রসুল। আর হাফিজুর রহমান খালাস পেয়েছেন। আদালতে আসামি হাফিজুরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট এ মামলায় শিশু হাসমিকে হত্যার দায়ে মা সোনিয়া আক্তারসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলরুবা সুলতানা।
সোনিয়ার সঙ্গে মো. হাফিজুর রহমানের বিয়ে হওয়ার ছয় মাস পর হাফিজুর রহমান বিদেশে চলে যান। দেশে আসার পর পারিবারিক কলহের জের ধরে দুজনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু হাসমি থেকে যায় বাবার সঙ্গে। পরে হাসমিকে তার বাবার কাছ থেকে অপহরণ করে আনার জন্য নুরুন্নবী ও রসুলের সঙ্গে চুক্তি হয় সোনিয়ার। ২০১৬ সালের ৬ জুন রাতে হাসমিকে অপহরণ করে তার মায়ের কাছে নিয়ে আসে। এরপর সোনিয়াকে অপহরণকারীদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায় হাসমি। বিষয়টি বাইরে ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে অপহরণকারীরা সোনিয়ার সামনেই হাসমিকে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর লাশটি সিমেন্টের বস্তায় ভরে খুলনা বাইপাস সড়ক সংলগ্ন সরদার ডাঙ্গা বিলে ফেলে দেয়া হয়।
ওই বছরের ৯ জুন খুলনার কার্ত্তিককুল এলাকা থেকে হাসমির বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মো. হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মো. নুরুন্নবী, হাফিজুর রহমান, মো. রসুলের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুমের মামলা করেন।
খুলনা গেজেট/এমএম