খুলনায় বর্ধিত দরে চিনি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। চিনির দর নির্ধারণ করে সরকার তিন সপ্তাহ আগে ঘোষণা দিলেও বাজারে তার কোন প্রভাব দেখা যায়নি। উল্টো বাজারে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পন্যটির দাম।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্যাকেটজাত চিনি দোকানে নেই। আর খোলা বস্তার চিনি ১১০ টাকায় বিক্রি করছেন খুলনার ব্যবসায়ীরা। যা গত ১৫ দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৯৪ টাকায়। প্যাকেট চিনির দাম কম হওয়ায় তা খুলে বস্তায় রেখে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা, এমন অভিযোগ ক্রেতাদের।
বড় বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী শাহ আলম মৃধা বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাওয়া যায় তা দিয়ে প্রয়োজন মেটানো সম্ভব না। বর্তমানে তিনি চিনি বিক্রি করছেন না বলে এ প্রতিবেদককে জানান।
একই বাজারের পাইকারী বিক্রেতা আশা স্টোরের সহকারী বিক্রেতা বলেন, চিনির উৎপাদন কমে গেছে। চিনির পরিমাণ জানিয়ে টাকা দেওয়া হলে মিল থেকে সে পরিমাণ পাওয়া যায় না। চিনির দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি জানালেন, গ্যাস সমস্যার কারণে চিনির উৎপাদন কমে গেছে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে চিনির দাম উর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। বর্তমানে ৫০ কেজির বস্তা ৫ হাজার ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন।
চিনির দাম বৃদ্ধির জন্য খুলনার খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন। রূপসা বাজারে খুচরা বিক্রেতা বাগেরহাট স্টোরের মালিক বলেন, বাজারে চিনি কোন সংকট নেই। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন বড় ব্যবসায়ীরা। ১৫ দিন আগে তিনি ৫০ কেজির বস্তা ৪ হাজার ৭০০ টাকা কিনেছেন। বৃহস্পতিবার তাকে একই পরিমাণ চিনি ৫ হাজার ১শ’টাকায় কিনতে হয়েছে। তার অভিযোগ এই ১৫ দিনে দেশে এমন কি হল যে প্রতি বস্তায় এত দাম বাড়াতে হল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বাজারের অপর ব্যবসায়ী জানলেন, খুলনার বড় বাজারের অনেক গুদামে চিনি মজুদ করা আছে। ব্যবসায়ীরা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে চিনির দাম। গত ১ বছরে ৫০ কেজির বস্তায় ১ হাজার ১ শ’ টাকা বেড়েছে।
খুলনা টিসিবি’র আঞ্চলিক প্রধান রবিউল মোর্শেদ বলেন, খুচরা বাজারে চিনির দাম বেড়েছে। কিন্ত সরকার টিসিবি’র এ পণ্যের দাম বাড়ায়নি। টিসিবি এখনও ৫৫ টাকায় চিনি বিক্রি করছে।
এদিকে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রেণে মাঠে নেমেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সহকারী পরিচালক শিকাদার শাহীনুর আলম বলেন, চিনি দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যেখানে দাম বেশী শোনা যাচ্ছে সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে। দাম বেশী রাখার কারণে বৃহস্পতিবার খুলনার দৌলতপুর বাজারে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে জরিমানা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ২২ সেপ্টেম্বর খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮৪ টাকা আর প্যাকেটজাত ৮৯ টাকা। এরপর ৬ অক্টোবর সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খোলা চিনি ৯০ টাকা এবং প্যাকেট চিনির দাম ৯৫ টাকা বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।