প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে ঋতুবদলের আয়োজন। শরৎ পেরিয়ে নামছে হেমন্ত, আসছে কার্তিক মাস।এরপর শীতকাল। কিন্তু এখনই প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। এরই মধ্যেই প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে হিম বাতাস। সেইসাথে হালকা শীতের ছোঁয়া অনুভব করতে পারছে খুলনাবাসী। সকালে কুয়াশা আচ্ছন্ন হয়ে থাকছে নগরী। মাঝরাতে মনে হয় এই বুঝি এলো শীত।
সারদিনের গরম শেষে গভীর রাত থেকে শুরু হচ্ছে হালকা হিমেল হাওয়া, সঙ্গে নামছে হালকা কুয়াশা। শীতকে ঘিরে সক্রিয় হচ্ছে নগরীর পিঠাপুলির দোকানগুলো।
বাংলা পঞ্জিকার হিসেবে হেমন্তের পর অগ্রহায়ণ পেরিয়ে তবেই আসবে শীতকাল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রকৃতির বিরুপ প্রভাব ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে হেমন্তের শুরুতেই পাওয়া যাচ্ছে শীতের আগাম বার্তা।
সেইসাথে গত দুইদিনের বৃষ্টিতে খুলনায় বেড়েছে ঠাণ্ডার মাত্রা। বেলা বাড়লেও সূর্যের তাপমাত্রা রয়েছে সহনীয় পর্যায়ে। থেমে থেমেই হচ্ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে শেষরাতে মতো কুয়াশা পড়েছে সেইসাথে বেড়েছে শীতল বাতাস। সরেজমিনে দেখা যায় ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত হালকা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। তবে কুয়াশার স্থায়িত্ব বেশিক্ষণ থাকছে না। সূর্য উঠলেই কুয়াশা কেটে যাচ্ছে।
আজ শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশার কারণে প্রকৃতিতে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন টানা গরমের পর কুয়াশামাখা পরিবেশ পেয়ে উচ্ছ্বসিত নগরবাসী। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে সড়কে কিছু যানবাহনে হেডলাইট জ্বালিয়েও চলতে দেখা গেছে।
নগরীর মুজগুন্নি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা, সোনিয়া বেগম, নিয়মিতই ফজরের নামাজ পড়ে হাঁটতে বের হন এই গৃহিণী। শুক্রবার সকালে হাঁটতে এসে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই ভোরে বেশ কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। এমনকি দিনের বেলা সূর্যের তাপমাত্রাও কমেছে। বোঝা যাচ্ছে শীত আসছে।
তিনি আরো বলেন, আমি দুদিন আগেই নড়াইল থেকে এসেছি। নড়াইলে ভোর বেলায় ঠান্ডা আরো বেশি। খুলনাতে সেই তুলনায় কিছুটা কম আছে।
এদিকে প্রকৃতিতে শীতল হাওয়া বইলেও তীব্র উত্তাপ দেখা গেছে নগরীর সবজির বাজারে। তবে বাজারে মৌসুমী সবজির আগমন আরও বাড়িয়েছে এই উত্তাপ। নগরীর একাধিক কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায় গাজর, ফুলকপি,বাঁধাকপি, টমেটো ও মুলাসহ নানান রকমের মৌসুমী সবজি আসছে বাজারে। তবে সরবরাহ কম থাকায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, কুয়াশা পড়া শুরু না হলেও তাপমাত্রা হ্রাসের সঙ্গে বৃষ্টি ও শীতল হাওয়া একটা শীত শীত আমেজ ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিরাজ করছে। তবে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান যতই কমবে শীত শীত ভাব তত বেশি অনুভূত হবে। তখন দিনের ও রাতের তাপমাত্রা দুটোই কমে আসবে। হেমন্তের শুরুতে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, বৃষ্টি—এককথায় শীতের আগমনী বার্তা।
খুলনা গেজেট/এইচ