দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের চাকা ঘুরছে আবার। প্রথম পর্যায়ে আজ । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব পাটকলের উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পাট দিবসের অনুষ্ঠানে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন তিনি। এই পাটকলগুলো আগেই ইজারার মাধ্যমে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইজারা হয়েছে ৩০ বছরের জন্য। মালিকানার পরিবর্তে মাসিক ভাড়াভিত্তিক ব্যবহার হবে। আগের যেসব শ্রমিক কাজে আগ্রহী কিংবা সক্ষম, নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার শর্ত রয়েছে ইজারা চুক্তিতে।
ছয়টি পাটকল হচ্ছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুট মিলস, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার কেএফডি, সিরাজগঞ্জের রায়পুরের জাতীয় জুট মিলস, যশোরের রাজঘাটের জুট ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনার দৌলতপুর জুট মিলস ও যশোরের রাজঘাটের কার্পেটিং জুট মিলস লিমিটেড।
দৌলতপুর জুট মিলের ব্যবস্থাপনায় এসেছে বেসরকারি খাতের ফরচুন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনি ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার টেকনোলজি। পাটপণ্যের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ওই পাটকলে জুতাও তৈরি করবে। গত ৪ সেপ্টেম্বর মূল কারখানাসহ পাটকলের প্রায় ১৪ একর জায়গা ইজারা দেওয়া হয় ফরচুন গ্রুপকে। মাসিক সাড়ে ৯ লাখ টাকায় ৩০ বছরের জন্য এই ইজারা দেওয়া হয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর ১০ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়ানো হবে। মিলটিতে উৎপাদিত পাটপণ্য ভারত, তুরস্ক, কানাডা ও ইউরোপে রপ্তানি করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ক্রমাগত লোকসানের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৭টি পাটকলের সব এখন বন্ধ। ২০২০ সালের ১ জুলাই ২৫টি পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। দুটি পাটকল বন্ধ হয় আরও আগেই। বন্ধ হওয়ার আগে ২৫টি পাটকলে ২৬ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। ৩৪ হাজার ৭৫৭ জন স্থায়ী শ্রমিকের পাওনা বাবদ নগদে ও সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
পাট মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এসব পাটকলে বস্ত্র ও পাটের ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিঙ্কেজ পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সবক’টি মিল বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু হলে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
বেসরকারি খাতের বর্তমান পাটকলগুলো প্রতিযোগিতায় পড়বে না বলে মনে করে বিজেএমএ। সংগঠনের মহাসচিব আবদুল বারেক খান বলেন, নতুন পাটকল উৎপাদনে এলে বরং ইতিবাচক একটি প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হবে। এতে পাট খাত লাভবান হবে।
খুলনা গেজেট/এইচ