ভারত থেকে আমদানি করা সরকারি চাল খুলনার ৪, ৭ নং ও মহেশ্বরপাশা ঘাটে কার্গো জটে আটকা পড়েছে। ৩৫টি কার্গোতে সিদ্ধ চালের পরিমাণ ৪৭ হাজার মেট্রিক টন। উল্লিখিত পরিমাণ আমদানিকৃত চাল ঈদে দুঃস্থদের, ভিজিএফ, ওএমএস’র জন্য আনা হয়েছে। দেশের ৬ বিভাগের গুদামগুলোতে চাল সরবরাহ করা হবে। ঈদের আগে এই চাল খালাস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভারত থেকে মোংলা ও খুলনার নদ-নদী বন্দরে জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত ২ লাখ ৪৩ হাজার মে.টন চাল আমদানির জন্য সরকার চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯৩ হাজার মে.টন চাল সংশ্লিষ্ট বন্দরে এসেছে। তার মধ্যে ৩৫ টি কার্গোতে ৪৭ হাজার টন মে. টন চাল ৪ নং ঘাট, ৭ নং ঘাট ও মহেশ্বরপাশা ঘাটে খালাসের অপেক্ষায় জটে পড়েছে। ৪ নং ঘাটে ১৬ টি কার্গো, ৭ নং ঘাটে ৭ টি ও বাকি ২৪ টি কার্গো মহেশ্বরপাশা ঘাটে অপেক্ষা করছে। দুঃস্থ, অসহায় পরিবার, ভিজিএফ, ওএমএস, ভিজিএফ জেলেদের জন্য, ঈদ উপলক্ষে এক কোটি পরিবারের জন্য, আনসার, জেলখানা, পুলিশ, বিজিবি ও ফায়ার ব্রিগেডের জন্য আনা হয়। এসব চাল ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন গুদামে পাঠানো হবে।
চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-নিয়ন্ত্রক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, লকডাউনের কারণে নির্ধারিত সময়ে এসব চাল পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ভারত থেকে জাহাজ ধারাবাহিক আসায় জট পড়েছে। তিনি জানান, আগামীতে আরও দু’লাখ মে.টন চাল খুলনা নদ-নদী বন্দরে আসবে। বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতেই মূলতঃ সরকার চাল আমদানি করছে।
৪ নং ঘাটের সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম জানান, জুলাইয়ের শুরু থেকে অতিবৃষ্টি, শ্রমিক সংকট, ঠিকাদারের অনুপস্থিতি, ট্রাক সংকট ইত্যাদি কারণে ঘাটের কার্গোর চাল খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি জানান, জাহিদ-১, রাজু এন্ড তুহিন নেভিগেশন, বেগম রোকেয়া-১, শ্যামলি-৭, ইফতি মাহামুদ, ইনালি ইত্যাদি জাহাজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। তার দেয়া তথ্যমতে, ভাই ও পুত্র, গ্লোব-১ নামক জাহাজ এক সপ্তাহ আগে এ ঘাটে আসে। অপর সূত্র জানান, ৭ নং ঘাটে রাশনা-১, এমভি সীওয়ে-১ কার্গো খালাস হচ্ছে। বাকি পাঁচটি কার্গো নোঙ্গর করা আছে। ৪নং ঘাটের রাজু এন্ড তুহিন নেভিগেশনের বস্তা বোঝাই চালের একটি অংশ জমাট বেধেছে।
৪ নং ঘাটে রাজু এন্ড তুহিন নেভিগেশনের চালক আব্দুস সালাম জানান, ইয়াস নামক ঘূর্ণিঝড়ের দু’দিন পরে ২৯ হাজার ৪শ ব্যাগ চাল বোঝাই করে তারা কলকাতা বন্দর ত্যাগ করেন। মোংলা ও ৪ নং ঘাটে সবমিলিয়ে এক মাস বিলম্ব হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে চাল খালাস হচ্ছে। উল্লিখিত পরিমাণ চাল খালাস হতে ঈদের পরে আরও এক সপ্তাহ লাগবে।
খুলনা খাদ্য পরিবহন (সড়ক পথ) ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে বলেন, খাদ্য বিভাগের পরিকল্পনার অভাব এবং জনবল সংকটের কারণেই কার্গো জটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঠিকাদার সমিতির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পরামর্শ অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন বলে কর্মকর্তারা তাদের পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, গত এক বছর যাবত খাদ্য পরিবহনের বিল ঠিকাদারদের পাওনা রয়েছে। এব্যাপারে খাদ্য বিভাগকে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।