খুলনার প্রান্তিক মানুষের যাপিত জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘নোনা পানি’। এই প্রথম খুলনায় ছবির প্রিমিয়ার শো হতে চলেছে। খুলনার মেয়ে সৈয়দা নিগার বানু পরিচালিত পূর্ণদৈর্ঘ্য এই ছবিটি প্রয়োজনা করেছে বেঙ্গল চলচ্চিত্র উন্নয়ন ফোরাম। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় খুলনার শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই শো অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে এ বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন ছবির পরিচালক সৈয়দা নিগার বানু, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শুভজিত রায় এবং চলচ্চিত্রশিল্পী রুবল রোদী।
ছবির পরিচালক সৈয়দা নিগার বানু বলেন, আঠাশ বছর বয়সী স্বামী পরিত্যাক্তা রোম্বা ঘূর্ণিঝড় আইলার শিকার হয়ে জীবনধারণের আশায় অন্য গ্রামে অভিবাসিত হয়েছে। সেই গ্রামটি চিংড়ি চাষের প্রতিক্রিয়ার শিকার। মানুষগুলো তাদের বাপ-দাদার কৃষিভিত্তিক পেশা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মাটি ও পানি অত্যধিক লবণাক্ত হওয়ায় সেখানে শস্য ফলানো প্রায় অসম্ভব। নদী থেকে চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করাই তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
চল্লিশ বছরের দশপাই পুরুষ না নারী এই দ্বন্দ্ব রয়েছে গ্রামের মানুষদের। তার চরিত্রটি রহস্যময়। বাইরের জগতের সাথে তার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম রেডিও। রেডিওতে মগ্ন এই চরিত্রটি পৃথিবীর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে, সে অবলীলায় যেমন কীর্তন গানের সাথে সুর মেলায় তেমনি আবার নেচে উঠে লাটিন বা ফরাসী বাজনার সাথে। পঁচিশ বছর বয়সী কৃষ্ণা যাত্রাদলের পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেত্রী। সুরেলা একটি গলা থাকলেও তার শরীরটা মোটেও আকর্ষণীয় নয়। রোম্বা, দশপাই ও কৃষ্ণারা তাদের নিঃসঙ্গতা, অসহায়ত্ব, জেদ আর টিকে থাকার লড়াইয়ের সূত্রে পরস্পরের সাথে সম্পর্র্কিত। তারা সবাই চায় গ্রামে থিতু হতে, চায় আত্মপরিচয়। এই আকাঙ্খাকে মর্যাদা দিতে গিয়ে তারা কখনো কখনো নিজ নিজ জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চায়। ছুঁড়ে ফেলতে চায় অসহায়ত্বের ঘেরাটোপ।
এসব চরিত্র নিয়েই গড়ে উঠেছে চলচ্চিত্র নোনাপানি। চলচ্চিত্রটির বর্ণনার কাঠামো বহুস্তরীয় ও বহুমাত্রিক। এই ছবির প্রিমিয়ার শো ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল চারটায় খুলনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে।
খুলনা গেজেট/এমএম