‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এদেশ নতুন করে’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষ্যে সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, দৈনিক আট ঘন্টা শ্রম, ন্যায্য মজুরি ও শ্রমের মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালে পহেলা মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকদের রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্যদিয়ে শ্রমিক ও শ্রমের মর্যাদা সম্মানের সাথে বিশ^ময় স্বীকৃতি লাভ করে। এই দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের অন্যতম দিন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন-উৎপাদনের কারিগর হলো শ্রমিকরা। শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকা প্রয়োজন। কোন শ্রমিক যেন অবহেলার শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের পাওনা সঠিক সময়ে বুঝিয়ে দিতে হবে। কর্মক্ষেত্রে যাতে কোন ধরণের অনাকাঙ্খিত পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেদিকে মালিক-শ্রমিক উভয়কে সচেতন থাকতে হবে। শ্রমিকদের সাথে মালিককে মিশে যেতে হবে। শ্রমিকরা মন-প্রাণ উজাড় করে কলকারখানায় কাজ করেন। শ্রমিকের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন এবং কর্মক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা ও সুস্থতাসহ সার্বিক অধিকার নিশ্চিত করা মালিকের দায়িত্ব।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) মো: বেলায়েত হোসেন ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোঃ আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ। স্বাগত বক্তৃতা করেন শ্রম দপ্তরের পরিচালক মোঃ হাফেজ আহাম্মদ মজুমদার।
মালিক প্রতিনিধির পক্ষ থেকে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টারর্স এ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এস হুমায়ুন কবির এবং শ্রমিক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তৃতা করেন ওজোপাডিকো (সিবিএর) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান ও বেসরকারি পাট, সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ গোলাম রসুল খান। জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন দপ্তর যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষ্যে খুলনা রেলওয়ে স্টেশন চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, শ্রমিক-মালিক-কর্মচারী, ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
খুলনা গেজেট/এনএম