খুলনার যুবক নাঈম মোল্লা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রানু বাবুকে গ্রেপ্তার করেছে। ২৫ মে রাত ৯ টার দিকে তাকে খুলনা রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার রানু বাবু খুলনা র্যাব-৬ এর সৈনিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হলেন ৩ জন।
র্যাবের ওই সৈনিক খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক আল আমিনের কাছে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এর পর তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।
স্থানীয়রা জানান, র্যাবের সৈনিক রানু বাবুর সাথে টিকটকার নুসরাত আমিন সুমনার সাথে ৭ মাসের পরিচয়। এ সময়ের মধ্যে তাদের বন্ধুত্ব অনেক গভীরে চলে যায়। রানু বাবু প্রায় তাদের বাড়িতে আসতেন। গভীর রাত পর্যন্ত সময় কাটিয়ে ফিরে যেতেন। র্যাব সদস্য হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সেদিন সাহস পায়নি। সেদিন দুপুরে টিকটকার সুমনার বাড়িতে অবস্থান করে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ফোন করে নাঈমকে ডেকে নেওয়া হয়। আর পরের দিন হাত পা বাঁধা অবস্থায় নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও র্যাব সদস্য রানু বাবুর ভয়ে কেউ পুলিশকে তার পরিচয় জানাতে পারেনি। নাঈম মোল্লা হত্যাকান্ডে সে জড়িত আছে বলে ওই এলাকার ওই সূত্রটি জানায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লবণচরা থানার এসআই মো. আব্দুর রহিম বলেন, নাঈম হত্যাকান্ডের পর র্যাবের সৈনিক রানু বাবু নওগা চলে যায়। পরে তিনি ২৫ মে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরবর্তীতে থানা পুলিশ জানতে পেরে তাকে খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে এ মামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। সৈনিক রানু বাবু স্বেচ্ছায় আদালতে জবানবন্দি দিতে চাইলে পরের দিন হাজির করা হয় এবং সেখানে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৩ মে ) ভোর ৫ টার দিকে নগরীর শিপইয়ার্ড মেইন রোড সংলগ্ন মোশারফের বাড়ির ভাড়াটিয়া আশরাফুল ইসলাম হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত যুবকের লাশ দেখতে পেয়ে লবণচরা থানায় খবর দেন। পরবর্তীতে লাশের পরিচয় পায় পুলিশ। এ ঘটনায় নাঈমের পরিচিত টিকটকার সুমনা ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়। রাতে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে মুখ খুলতে থাকে সুমনা। পরে এ ঘটনায় বাদি হয়ে লবণচরা থানার এসআই বেল্লাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে ২৫ মে এ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি র্যাবের সৈনিক রানু বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেও হত্যাকান্ডের ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করার পর আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
খুলনা গেজেট/সাগর/এনএম