খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  কক্সবাজারে বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলা
  এস কে সুর চৌধুরীর স্ত্রী ও মেয়ের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ

খুলনায় দ্বিতীয় দিনের মত ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনায় দ্বিতীয় দিনের মত ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে চিকিৎসকরা। সম্প্রতি ম্যাটস ও ডিএমএফ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সংসস্কারের পাঁচ দফা দাবিতে দেশ ব্যাপি এ আন্দোলন চলছে।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ সিনিয়র চিকিৎসকরা সংহতি জানিয়েছে। এদিকে ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ রোগীরা। বিশেষ করে দুপুরের পরে হাসপাতালে জেষ্ঠ চিকিৎসকরা না থাকায় জরুরী প্রয়োজনে চিকিৎসক খুজে পাচ্ছে না রোগীরা। আগামীকাল মঙ্গলবার নগরীর শিববাড়ি মোড়ে খুলনায় ৪টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ণ চিকিৎসক এর মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে।
সোমবার দুপুর ১২টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ইন্টার্ণ ডক্টরস এসোসিয়েশন এর সভাপতি ডাঃ আরাফাত হোসেন এর সভাপতিত্বে সমাবেশে ইন্টার্ণ চিকিৎসক ছাড়াও মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং অনেক সিনিয়র চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন বাংলাদেশে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা ছাড়া আর কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না এটা সর্বজন বিদিত। সারা বিশ্বে এবং বাংলাদেশের আদালতে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত রায়ের বিপরীতে ম্যাটস এবং ডিএমএফ এর রীট করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আদালত এ পর্যন্ত ৯০ বার রায় পিছিয়েছে। সাধারন মানুষদের আমরা এ বিষয়গুলোয় আরো সোচ্চার ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও বিজ্ঞ আদালতকে অতিদ্রুত এ রিটকে খারিজ করে ডাক্তারদের পক্ষে রায় ঘোষনার আহ্বান জানাচ্ছি।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ণ ডক্টরস এসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মো. আরাফাত হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, যদি রীট করেই নামের আগে ডাক্তার লেখা যায় তাহলে এতো কষ্ট করে লাভ কি। আমাদের যেখানে এখনও একটি এন্টিবায়টিক লিখতে বারবার ভাবতে হয় সেখানে ডিএমএফ এবং ম্যাটসরা ইচ্ছামত বয়সের তারতম্য না করে গণহারে এন্টিবায়টিক ব্যবহার করে যাচ্ছে। এই রীট এই মুহুর্তে খারিজ করতে হবে। আমাদের কর্মবিরতি সারাদেশে সকল মেডিকেলের সাথে একাত্মতা রেখে পালন করা হচ্ছে। আমাদের পাঁচদফার প্রধান দাবী হলো এমবিবিএস এবং বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবেনা। এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় খুলনার শিববাড়ী মোড়ে খুলনার সরকারী এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সকল শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন ডাক্তাররা মানববন্ধন করবে।

এদিকে টানা দুইদিন ধরে কর্মবিরতি চলায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তি তৈরী হচ্ছে। বিশেষ করে ছাড়পত্র পেতে ভোগান্তি হচ্ছে বেশি। এছাড়া দুপুর ২টার পর হাসপাতাল অনেকটাই ইন্টার্ণ চিকিৎসক নির্ভর হয়ে পড়ে। ফলে কর্মবিরতি চলার কারণে চিকিৎসক ডেকে না পাওয়ার অভিযোগ করেছে কয়েকজন রোগী।

খুলনার দাকোপ সুতারখালি থেকে ফিজিক্যাল এসাল্ট রোগী শাহালম ভর্তি রয়েছে সার্জারি বিভাগেরর ৯-১০ ওয়ার্ডে। তার ছেলে এহসান বলেন, আমাদের সকালে ছুটি দিয়েছে যদিও আমার বাবা এখনও পুরোপুরি সুস্থ না। কিন্তু সকালে ছুটি দেয়ার কথা বলা হলেও সাড়ে ৩টায় ছাড়পত্র দেয়নি। আমরা সন্ধ্যার পর আর বাড়ি যেতে পারেবো না দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে।

মেডিসিন ওয়ার্ডের ২ জন রোগী নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেছেন, গতকাল রাতে ওয়ার্ডে কোন ডাক্তার ছিলো না। শ্বাসকষ্ট হওয়ায়র বারবার ডাক্তারের রুমে যেয়ে কাউকে পাইনি। যদিও কোন বড় ক্ষতি হয়নি। নিজেরাই ওয়ার্ডের ভিতর থেকে অক্সিজেন ম্যানেজ করে নিয়ে দিয়েছি।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মিজানুর রহমান বলেন, ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা জাতীয় একটি ইস্যুতে কর্মবিরতি পালন করছে। তাদের এই দাবি যৌক্তিকতা রয়েছে। তবে কর্মবিরতিতে যাতে রোগীদের কোন ধরণের ক্ষতি না হয়। যাতে প্রত্যেকটি রোগী সুচিকিৎসা নিশ্চিত হয় সে জন্য আমরা মিড লেভেলের চিকিৎসক যেমন সহকারী রেজিস্ট্রার এবং অনরারি মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অফিসারকে আরও একটিভ হয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়েছি যাতে কোন রোগীর কোন সমস্যা না হয়।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!