ESOLVE ইন্টারন্যাশাল লিমিটেডের অর্থায়নে বাস্তবায়িত কমিউনিটি-বেইজড ইকোট্যুরিজম (সিবিইটি) প্রকল্পের বেইজলাইন সার্ভের ফলাফল শেয়ারিং এর লক্ষ্যে রবিবার (২৮ এপ্রিল) ওয়ার্কশপ অন বেইজলাইন স্ট্যাডি অন কমিউনিটি-বেইজড ইকোট্যুরিজম (সিবিইটি) এরাউন্ড দি সুন্দরবন’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত খুলনা- ১ সংসদ সদস্য জনাব ননী গোপাল মন্ডল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফিরোজ শাহ, মিহির কুমার দে বন সংরক্ষক, খুলনা সার্কেল বন বিভাগ, পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান ট্যুরিস্ট পুলিশ খুলনা রিজিওন, মো. ইকবাল হোসেন পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি ননী গোপাল মন্ডল বলেন, সুন্দরবন আজ অবক্ষয়ের পথে। সুন্দরবনে সুন্দরি গাছ কমে কেছে, এর প্রকৃতি পরিবর্তন হয়েছে। তবে এই সুন্দরবনকে ঘিরে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। তবে জীবিকার চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে সুন্দরবন আজ বিপর্যস্ত। প্রযুক্তি প্রসারের পাশাপাশি এলাকায় ইকোট্যুরিজম প্রসারিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন তার বক্তব্যে ট্যুরিজম পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিবেশ আইনের প্রতি সবাইকে অনুগত থাকার আহবান জানান।
ট্যুরিস্ট পুলিশ খুলনা সার্কেলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ট্যুরিজম শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে কমিউনিটি ট্যুরিজম বিকাশের উপর বিশেষ জোর দেয়ার আহবান করেন। পাশাপাশি ট্যুরিস্ট এলাকায়গুলোতে সব ধরনের দূষণ বন্ধ করতে হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশের অন্যতম একটা লক্ষ্য হচ্ছে ট্যুরিজমকে বিকাশ করা, সেক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট পুলিশের যে জায়গাগুলোতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে, সেখানে সম্পৃক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট পুলিশকে সহায়তা করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।
বন বিভাগ খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, সম্প্রতি সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় ইকো-কটেজ, ইকো-রিসোর্ট সম্প্রসারিত হয়েছে। ইকো-রিসোর্ট, কটেজগুলোকে একটা গাইডলাইনের মধ্যে আনা হবে, ফলে এই বিষয়গুলো নিয়ে যে সকল সমস্যা রয়েছে, তার সমাধান হবে। তবে বিদ্যমান আইনের আওতায় কেউ যদি কোন অপরাধ করে, তা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। ইকো-রিসোর্টগুলো যাতে পরিবেশবান্ধব হয়, সে বিষয়ে সকলের প্রতি আহবান জানান। এলাকার মানুষদের কিভাবে আরও বেশী ইকো ট্যুরিজমে সম্পৃক্ত করা যায়, সেদিকে নজর দেয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে আহবান করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফিরোজ শাহ বলেন, বিগত ১৫ থেকে ২০ বছরে সুন্দরবনে নদী-নালা কমেছে এটা একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ইকোট্যুরিজম হতে পারে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটা মাধ্যম। তবে ইকোট্যুরিজমের প্রসারের ক্ষেত্রে পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে ESOLVE ইন্টারন্যাশাল লিমিটেডের ডাইরেক্টর অপারেশন্স জনাব বজলে কাদের চৌধুরী, খুলনাসহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী (আন্তর্জাতীক ও জাতীয় পর্যায়ের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দ, সুন্দরবন সংলগ্ন ইকোকটেজের মালিক/প্রতিনিধি, ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব সুন্দরবন এর নেতৃবৃন্দ, সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিবৃন্দ, আইনজীবী, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
তবে ইকোরিসোর্টের প্রসারকে স্বাগত জানান প্রধান অতিথি। কেননা এর মাধ্যমে সুন্দরবনে পর্যটন প্রসারিত হচ্ছে। তিনি আয়োজক সংশ্লিষ্টদেরকে একটি প্রস্তাবনা তৈরী করার জন্য বলেন, এবং এ বিষয়টি তিনি সংসদে বিল হিসেবে উত্থাপনের ঘোষনা করেন।
খুলনা গেজেট/এএজে