প্রতিনিয়ত মাদক ব্যবসার ভাগাভাগি নিয়ে হামলা, মামলা ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। যার ফলে শিল্প ও বন্দর নগরী খুলনা আবারো অশান্ত হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, মাদকের করাল গ্রাস থেকে যুবসমাজকে রক্ষার জন্য মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। খুলনা থেকে মাদকের অবাধ বাণিজ্য বন্ধে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সাথে খুলনা মহানগরীকে মাদকমুক্ত করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
শুক্রবার (৯ মে) বেলা ১১টায় কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ে ‘মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা, মাদক ব্যবহারে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ও মাদকমুক্ত খুলনা বির্নিমানে’ মহানগর বিএনপির প্রেসব্রিফিং-এ তিনি এসব কথা বলেন।
এড. মনা বলেন, মাদকের ভয়াল থাবায় আক্রান্ত আজ খুলনা মহানগরী। যার প্রধান শিকার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। মাদক সেবীর সংখ্যা উদ্বেগের। মাদক নিরাময় কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী আসক্তদের ৭০ শতাংশই বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। যাদের বয়স ১৪-২২ বছরের ভেতর। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনায় এমন অবস্থা হয়েছে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। সহজলভ্য হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত অভিযানেও থেমে নেই মাদকের বেচাকেনা। মাদককে কেন্দ্র করে খুলনায় খুনোখুনি বেড়েছে। মাদকের উৎস নষ্ট করতে না পারলে এর ব্যবহার রোধ করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, প্রতিনিয়ত নগরীতে অভিনব পন্থায় আর সু-কৌশলে মাদকের বেচাকেনার আড়ালে থাকা রাঘব-বোয়ালদের ছত্রছাত্রায় ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে মাদক নামক ব্যাধি।
মাদকে আসক্তির কারণে ক্রমশই সমাজে বেড়ে উঠছে নানা প্রকার সামাজিক অপরাধ। যার মধ্যে রয়েছে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, জখম, ধর্ষণসহ বহুল সামাজিক অপরাধ। ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি সেজে, মোটরসাইকেলে প্রেস স্টিকার লাগিয়ে, স্কুল কলেজের ইউনিফরম পড়ে, পাগল ও ভিখারির বেশে এবং ভ্রাম্যমাণ হকার সেজে অনেক ব্যবসায়ী মাদকসেবীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে গাজা, ইয়াবা, মদ, হেরোইন, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সামগ্রী। যুব সমাজকে মাদকের ভয়াবহ করাল গ্রাস থেকে বিরত রাখার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে মাদক প্রতিরোধে সকলে মিলে মাদক ব্যবসায়ীদের সামাজিকভাবে বয়কট করার জন্য আহবান জানান।
খুলনাকে মাদকমুক্ত করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে ৪দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শনিবার (১০ মে) নগরীর খালিশপুর থানার ৭, ৮ ও ১০ ওয়ার্ডের উদ্যোগে মাদক বিরোধী র্যালী বিকাল ৪টায় চিত্রালী বাজার। রবিবার (১১ মে) খালিশপুর থানার ৯, ১৪ ও ১৫নং ওয়ার্ডে মাদক বিরোধী র্যালী বৈকালী মোড়। সোমবার (১২ মে) ১১, ১২ ও ১৩ নং ওয়ার্ডে র্যালী স্থানীয় বিএনপি অফিস। ১ ও ৩নং ওয়ার্ডে মাদক বিরোধী র্যালী বিকাল ৪টায় র্যালী গেটে।
এড. মনা মাদক বিরোধী কর্মসূচি সফল করতে খুলনাবাসিসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
প্রেসব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক যথাক্রমে শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, সদর থানা বিএনপির সভাপতি কে এম হুমায়ুন কবীর, সোনাডাঙ্গা থানার সভাপতি হাফিজুর রহমান মনি, খালিশপুর থানার সভাপতি এড. শেখ মোহাম্মাদ আলী বাবু, সোনাডাঙ্গা থানার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, খালিশপুর থানার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, দৌলতপুর থানার সাধারণ সম্পাদক শেখ ইমাম হোসেন, বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস, মাসুদ-উল হক হারুন, গাজী আফসার উদ্দীন, মোঃ মাহমুদ আলম মোড়ল, মোঃ সাইফুল আলম,কাজী সামীম,মোঃ জাহিদুল হোসেন, হায়দার আলী তরফদার, গোলাম মোস্তফা ভুট্রো, সাইফুল ইসলাম, আমিন আহমেদ, আরিফুল ইসলাম বিপ্লব, সবুজ হোসেন, মাহফুজুর রহমান মাজু, শেখ নুরুল ইসলাম, আব্দুল কাদের মল্লিক, আসমত আলী, হালিম শেখ, বাচ্চু শেখ, এস আরিফুর রহমান শিমুল, সহিদুজ্জামান জুয়েল, মাহাবুব আলম, নুরুল হুদা পলাশ, সৈয়দ নাদিম আশফাক, শেখ মোজাফর,সৈয়দ তানভীর আহম্মেদ, মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেলের মিজানুর রহমান মিলটন, রকিবুল ইসলাম মতি, ইয়াসীন আরাফাত রুমী, সৈয়দ হুমায়ূন কবীর (রানা কবীর) প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এনএম