খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিতরেই চলছে ব্যক্তিগত প্যাথলোজির রমরমা ব্যবসা। হাসপাতালের নিচতলার এআরটি সেন্টারের ল্যাবে সিনডিড নামে একটি প্যাথলোজি চালান হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান সেলিমুজ্জামান। সহকারি পরিচালক ডা. মিজানুর রহমানের গোপন অভিযানে বেড়িয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ভুয়া ল্যাবের প্যাড, মেয়াদউত্তীর্ণ ও মানহীন রিএজেন্ট ও রিপোর্ট প্রিন্ট করার জন্য ল্যাপটপ ও প্রিন্টার। সরকারি হাসপাতালের মধ্যেই এমন ভয়াবহ অপরাধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে নাগরিক সমাজ।
জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলার ১৩০ নম্বর রুম। এইডস আক্রান্ত রোগীদের ভাইরাল লোড পরীক্ষা করার জন্য এই রুমটি ব্যবহার করা হয়। রুমে একটি সরকারি ফ্রিজে সরকারি রিএজেন্ট এবং ভাইরাল লোড পরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি রয়েছে। এই ল্যাবের একমাত্র মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট মো. সেলিমুজ্জামান। সরকারি হাসপাতালে বসে দীর্ঘদিন ভয়াবহ প্রতারণা করে আসছে রোগীদের সাথে। নিজের ছেলের নামে গায়েবী প্যাথলজি বানিয়ে তার প্যাড রেখেছেন এই ল্যাবে। ভুয়া রিপোর্ট করার জন্য রয়েছে ল্যাপটপ এর এই রিপোর্ট প্রিন্ট করার জন্য রয়েছে বাইরে থেকে নিজেই কিনে এনেছেন প্রিন্টার। সব মিলে গায়েবী প্যাথলোজির ভুয়া রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেবে ঠকছেন সাধারণ রোগীরা।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান অভিযান চালায় এই ভুয়া রিপোর্ট তৈরীর গায়েবী প্যাথলোজিতে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সেলিমুজ্জামানের সিনডিড ডায়াগনষ্টিক এন্ড রিসার্স সেন্টার নামে একটি গায়েবী প্যাথলজির শতশত রিপোর্ট প্যাড। ভুয়া রিপোর্ট তৈরীতে ব্যবহৃত ল্যাপটপ এবং প্রিন্টার। সরকারি ফ্রিজের ভিতরে মেয়াদ উত্তীর্ণ রিএজেন্ট এবং মানহীন রিএজেন্ট। এছাড়া গায়েবী রিপোর্টে সব জেনেও যারা চুপ থাকেন তাদের জন্য রয়েছে মোটা কমিশন উদ্ধার হয়েছে কমিশনের রেজিস্ট্রার খাতাও। সেখানে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও নিরাপত্তা বাহিনী আনসারের নামও ।
ডা. মিজানুর রহমান বলেন, কয়েকদিন ধরে এমন খবর আসতেছিলো যে হাসপাতালের মধ্যেই গায়েবী প্যাথলোজি খুলেছেন সেলিমুজ্জামান নামে এক মেডিকেল টেকনোলোজিষ্ট। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সকল তথ্য প্রমানসহ তাকে পরিচালক স্যারের রুমে নিয়ে আসি। সেখানে উপ-পরিচালক ও তত্বাবধায়ক স্যাররাও ছিলেন। সে উন্নয়ন খাতের কর্মচারী। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হচ্ছে। কোন ধরণের অনিয়ম চলবে না খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
অভিযুক্ত মেডিকেল টেকনোলোজিষ্ট মো. সেলিমুজ্জামান বলেন আমি কয়েকদিনের জন্য মাত্র এটি করেছিলাম। এখন আর করি না। কিন্তু এগুলো সড়ানো হয়নি। আমি এখানে এগুলো ব্যক্তিগত রিসার্সের জন্য সামান্য পরিমাণে করতাম। আমার বাসায় মেশিন আছে সেখান থেকে টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট এনে দিতাম। তবে এগুলো বেশ কিছুদিন আগে থেকে বন্ধ করেছি এখন আর করি না।
খুলনা গেজেট/এএজে