সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেড প্রদান ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনার দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) টানা তৃতীয় দিনের মতো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. অনুপম কুমার বৈরাগী, প্রফেসর ড. দেবেশ দাস, প্রফেসর ড. মো. ইউনুস আলী ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মোর্ত্তজা আহমেদ।
এ সময় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তারা বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে গত মে মাস থেকে আন্দোলন চলছে। এখনো এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আমরা পাইনি। ২৫ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত অর্ধদিবসব্যাপী কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। আগামী ৩০ জুন পরীক্ষাকে আওতামুক্ত রেখে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও দাবি পূরণ না হলে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি (ক্লাস, পরীক্ষা ও সমস্ত দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকবে) পালন করা হবে। বক্তারা অবিলম্বে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত না করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়ন এবং সুপার গ্রেড প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি দাবি জানান।
কুয়েট : কুয়েট শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আব্দুল হাসিব। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকগণ বক্তৃতা করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, একই বেতনস্কেলে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি অবলম্বন সংবিধানের মূল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। এর মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র একই শ্রেণীর কর্মচারীর একটি নির্দিষ্ট অংশকে সুবিধাবঞ্চিত করবে। একই বেতনস্কেলে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি অবলম্বন সংবিধানের মূল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। এ সময় বক্তারা প্রত্যয় স্কিম বাতিল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যেখানে একটা পেনশন ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছেন সেখানে নতুন করে অন্য একটি বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিমে তাদের অন্তর্ভূক্তির ফলে সরকারি অন্যান্য চাকুরিজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য বাড়াবে। এই পেনশন ব্যবস্থার ফলে ভবিষ্যতে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানে উৎসাহ হারাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টেকসই ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে এই বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন গভীর অন্তরায় হবে। বক্তারা অবিলম্বে সর্বজনীন পেনশন স্কিম হতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অন্তর্ভূক্তি প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রনয়ণ ও সুপারগ্রেড প্রদানের দাবি জানান।
খুলনা গেজেট/এএজে